নিজস্ব প্রতিনিধি:
গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরটি প্রথম প্রকাশ করেছিলেন শফিকুল আলম, যিনি তখন এএফপির ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োজিত শফিকুল আজ গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করেছেন।
সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করে শফিকুল জানান, “দুপুরের আগেই শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে, তবে অনেকেই এটিকে গুজব বলে মনে করেন। পরিস্থিতি স্পষ্ট হয় যখন টেলিভিশনে সেনাপ্রধানের ভাষণের ঘোষণা দেখা যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে আমি এএফপির মাধ্যমে বিশ্বকে প্রথম জানাই যে গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।”
একটি ফেসবুক পোস্টে শফিকুল সেই দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন: “আমার সূত্র আমাকে জানায়, হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে সময়াভাবের কথা জানান। তারা তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে তাকে ও তার বোনকে দেশ থেকে সরিয়ে নেয়।”
সংবাদ প্রকাশের ঝুঁকি নিয়ে শফিকুল বলেন, “এএফপির দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি কি আমার সূত্রের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখি? আমি নিশ্চিত করলে তিনি বিশ্বব্যাপী অ্যালার্ট জারি করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালালেন’ শিরোনামে সংবাদটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।”
এই খবর প্রকাশের পর পুরো দেশে উল্লাসের বন্যা বয়ে যায়। ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে স্বৈরাচারের পতন উদযাপন করতে। শফিকুলের এই সাহসিক সাংবাদিকতা তাকে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি এনে দেয় এবং বর্তমানে তিনি সরকারের উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করছেন।
গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে এই স্মৃতিচারণ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে পুনর্ব্যক্ত করেছে, যখন জনগণের শক্তি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটায়।