মোঃ ফাহিম,পবিপ্রবি প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বিএনপিপন্থি শিক্ষক এবিএম সাইফুল ইসলাম এর আগ্রাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভিসি,প্রোভিসি,রিজেন্ট বোর্ড সদস্য,রেজিস্ট্রার,প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য ২৮ টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা রয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে তাঁর পদ শূন্য হয়।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা এবং রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ছিলেন।ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা পদে অধ্যাপক ড. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারকে এবং রিজেন্ট বোর্ড সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পরবর্তী নিজেকে বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পবিপ্রবি ইউট্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক দাবি করে ছাত্রবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দেন সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, তিনি সিনিয়র ও নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার জুনিয়র এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামাতিকরণ করছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধ্যাপক ড. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার গ্রেড-২ এর অধ্যাপক এবং দেশের বাইরে থেকে পিএইচডি, পোস্ট-ডক ডিগ্রিধারী। পক্ষান্তরে,সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম গ্রেড-৪ এর সহযোগী অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ থেকে পিএইচডি ডিগ্রিধারী।
জামাতিকরণ অভিযোগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিসি,প্রোভিসি,রিজেন্ট বোর্ড সদস্য,রেজিস্ট্রার,প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য ২৮ টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা রয়েছেন এবং বাকি ৫ টি পদে জামাতপন্থি শিক্ষকরা রয়েছেন।এছাড়াও হত্যা,নারী কেলেঙ্কারি,দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাব পবিপ্রবি ইউনিটের সভাপতি পদের কারণে অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকে রিজেন্ট বোর্ড সদস্য নিয়োগ করা হয়।উল্লেখিত সকল অভিযোগের প্রমাণাদি ইতিমধ্যেই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী হুসাইন আল মামুন বলেন,জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী শিক্ষকদের এমন দখলদারিত্ব মনোভাব আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে।শিক্ষা এবং গবেষণার অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য না রেখে সিট দখল আমাদের জন্য দুঃখজনক।
সাবেক শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী এমন আগ্রাসন আমাদের জন্য হতাশাজনক। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা, গবেষণা এবং দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে প্রশাসনের শক্ত অবস্থানের বিকল্প নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষকদের পদায়ন করেছি। কারও স্বার্থচরিতার্থের লক্ষ্যে এমন হীন কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তিনি আরও বলেন, সে যদি এমন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে তবে সরকারি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
বিতর্কিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদকে কেন রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য করা হলো-এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন তিনি।