নিজস্ব প্রতিনিধি:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ছয় ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে। তদন্ত সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক খাতের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তালিকাভুক্ত সাবেক গভর্নররা হলেন ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। আতিউর রহমানের সময়কালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, হলমার্ক ও বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটে। ফজলে কবিরের আমলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক দখলের ঘটনা এবং আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে ঋণ খেলাপিদের ব্যাপক ছাড় দেওয়ার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
সাবেক ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে এসকে সুর চৌধুরী ও মাসুদ বিশ্বাস বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। অন্য ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে এসএম মনিরুজ্জামান ব্যাংক পরিদর্শন বন্ধ রাখা, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান অর্থপাচার রোধে ব্যর্থতা এবং কাজী ছাইদুর রহমান ডলার বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তদন্তাধীন।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান দেশত্যাগ করেছেন এবং তার পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে। ফজলে কবির দেশে থাকলেও প্রকাশ্যে আসছেন না, আর আব্দুর রউফ তালুকদার গত ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।
বিএফআইইউর এই তদন্তকে ব্যাংক খাতের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তে বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা করে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের চিত্র স্পষ্ট হবে।