২০শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ডাকসু নির্বাচনে তিন প্যানেলে বিভক্ত বৈষম্যবিরোধী নেতারা, এনসিপি নেতা বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়করা তিনটি ভিন্ন প্যানেলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এই বিভক্তি এনসিপির মধ্যে তীব্র সংকট সৃষ্টি করেছে, যার ফলে দলের যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন সমন্বয়করা গঠিত তিনটি প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রথম প্যানেল ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ ব্যানারে ভিপি পদে আব্দুল কাদের এবং জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার প্রার্থী হয়েছেন। দ্বিতীয় প্যানেল ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’র ব্যানারে ভিপি পদে উমামা ফাতেমা এবং জিএস ও এজিএস পদে আল সাদী ভূঁইয়া ও মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি প্রার্থী হচ্ছেন। তৃতীয় প্যানেল ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’-এ জিএস পদে মাহিন সরকার এবং ভিপি পদে জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ প্রার্থী হচ্ছেন।

মাহিন সরকারের স্বতন্ত্র প্যানেলে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ’ হিসেবে বিবেচনা করে এনসিপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহউদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাহিন সরকার দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়াই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এই পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “ক্যাম্পাসগুলোয় আবহ তৈরি হয়েছে। ভয়ের পরিবেশ নেই। যে কারণে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।” তিনি আরও যোগ করেন, “অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ যদি নিজেরা বসে নিজেদের আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে প্যানেলের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারতো তাহলে হয়তো সেটা আরেকটু ভালো হতো।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ এই বিভক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “এনসিপির রাজনৈতিক লক্ষ্য বা কর্মসূচি এখনো স্পষ্ট না। যদি তারা তাদের রাজনীতি স্পষ্ট না করে তাহলে টেকার কোনো কারণ দেখি না।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতেও দলটি সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করে এনসিপি ও এর নেতৃত্ব। তবে ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট এই বিভক্তি সংগঠনটির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top