নিজস্ব প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান সাক্ষ্য দিয়েছেন যে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ মুমূর্ষু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি ট্রাইব্যুনালকে জানান, তার হাসপাতালে মোট ৫৭৫ জন গুলিবিদ্ধ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৩ জন মারা গেছেন এবং ১৬৭ জনের মাথার খুলি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ডা. মাহফুজুর রহমান তার সাক্ষ্যে উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে দমনে ডিবির একটি দল রাজধানীর নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে এসে গুলিবিদ্ধদের চিকিৎসা ও মুক্তি না দিতে হুমকি দেয়। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুরু থেকেই চিকিৎসা প্রদানে বাধা দিয়েছে। পরে আমরা রোগীদের পরিচয় ও আহতের কারণ গোপন করে অনেকের চিকিৎসা দিয়েছি।”
জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৩তম সাক্ষী হিসেবে ডা. মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দিতে আরও বলেন, “আমরা ৫৭৫ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। যাদের অনেকেরই মাথার খুলি গুলিতে উড়ে গেছে। এই হাসপাতালে মারা যায় ৩৩ জন। গুরুতর অবস্থায় আটজন ভর্তি হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন মারা যায়। বাকি সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানো হয়।”
এর আগে অন্য সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে দাবি করেন যে পঙ্গু হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এদিন রাজধানীর চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা মামলায়ও সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকালেই কারাগারে থাকা আসামিদেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।