নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন-পরবর্তী নতুন সরকারে তিনি কোনো পদে থাকবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি এ ঘোষণা দেন।
নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, “আমি শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছি—জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতেই হবে। এই নির্বাচনের পরবর্তী সরকারে আমি কোনো পদে থাকব না, নির্বাচিত বা নিযুক্ত—কোনো ভূমিকাতেই নয়। আমাদের সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা।”
তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে অনুপ্রেরণাদায়ক হিসেবে বর্ণনা করেন। ২০২৪ সালে দ্য ইকোনমিস্ট বাংলাদেশকে ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাঙা অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচন আয়োজন এবং লুটপাট হওয়া অর্থ ফেরত আনার কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা বুঝতেই পারেননি যে বিশ্ব তাদের অগ্রগতি এত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
ইউনূস তার সরকারের অগ্রাধিকারসমূহের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের দমন-নিপীড়নে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো তাদের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর বরাত দিয়ে উল্লেখ করেন যে আগের সরকার ও তাদের সহযোগীরা ১৫ বছর ধরে বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে।
দায়িত্ব গ্রহণের সময়ের চ্যালেঞ্জের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পুলিশ তাদের অবস্থান ছেড়ে চলে গিয়েছিল, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল, অর্থনীতি বিপর্যস্ত ছিল এবং গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ধীরে ধীরে দেশকে পুনর্গঠনের পথে আনা হয়েছে।
ইউনূস বিদেশনীতিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা প্রতিবেশী দেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘের সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
তিনি সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরতন্ত্রের দিকে ফিরে না যায়, সে উদ্যোগের কথাও প্রকাশ করেন। তরুণ প্রজন্মকে এই যাত্রার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে আখ্যায়িত করে ইউনূস বলেন, জেনারেশন জেড শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বকে বদলে দিতে পারে।