নিজস্ব প্রতিনিধি:
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) প্রদানের সিদ্ধান্ত দলটির অভ্যন্তরে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, যিনি একইসাথে দলের কৌশলগত অবস্থানেরও সমালোচনা করেছেন।
মঙ্গলবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে রনি মত প্রকাশ করেন যে, ফজলুর রহমানকে শোকজ দেওয়ার পরিবর্তে সম্মানসহকারে বিষয়টি সমাধান করা উচিত ছিল। তিনি লিখেছেন, “মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান শোকজের যে জবাব দিয়েছেন, তা ইতিমধ্যে অনলাইনে ভাইরাল হয়ে বিএনপির জন্য একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে, পুলিশ হত্যা এবং স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারের মতো সংবেদনশীল অভিযোগ তিনি যেভাবে উত্থাপন করেছেন, তা যদি দলটি সঠিকভাবে না বুঝতে পারে তবে ভবিষ্যতে বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।”
রনি আরও উল্লেখ করেন, ফজলুর রহমান তার বক্তব্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এবং জুলাই বিপ্লবের নেপথ্যের “কালো শক্তি” সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা ইতিমধ্যে সারাদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “এ ধরণের বক্তব্য রাষ্ট্রের হাতে একটি শক্তিশালী দলিল হিসেবে থাকতে পারে, যা বিএনপির জন্য ভবিষ্যতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।”
তিনি বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়েও কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন। তার মতে, দলটি ভয়ভিত্তিক রাজনীতি করছে এবং লড়াইয়ের পরিবর্তে সমঝোতার পথ খুঁজছে। তিনি অভিযোগ করেন, “দলের নেতারা শেখ হাসিনার ভয়ে পালিয়ে থাকছেন, এবং এই অবস্থানের কারণে তাকে ভিডিওর মাধ্যমে অপমানের শিকার হতে হচ্ছে। বিএনপি নেতৃত্ব এই ভিডিও দেখে ভীত হয়ে নেতাদের বিপক্ষে শোকজ দিচ্ছেন, যা দলের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে।”
রনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে বিএনপি থেকে জাতীয় পার্টির মতো আরেকটি বিভক্ত দলের উদ্ভব হতে পারে। শেষে তিনি পরামর্শ দেন যে, ফজলুর রহমানকে দেওয়া শোকজ প্রত্যাহার করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যাতে তার বক্তব্যের প্রেক্ষাপট বোঝা যায়। যদি তিনি দলের জন্য উপযুক্ত না হন, তবে তাকে সম্মানের সাথে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে; অপমান নয়।