মোহাম্মদ রকিবুল হক শাকিল, ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের হরিনাদীঘির দোকান সড়কসহ এলকার প্রায় সড়ক দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা ও দুর্গম। প্রায় ১৫ বছর ধরে এলাকায় কোনো উল্লেখযোগ্য সড়ক সংস্কারের কাজ হয়নি। বর্ষার সময় সড়কগুলোতে খানাখন্দের ভরে যায়, কাদাপানি জমে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকায় দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে আসে। খারাপ সড়কের কারণে তাদের দৈনন্দিন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
দীর্ঘদিন প্রশাসনের নজর এড়ানো এই সড়কের সংস্কার কাজে এবার এগিয়ে এসেছে সুন্দরপুর ইউনিয়নের হরিণাদিঘী ওয়ার্ড জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে বালি ও ইট ব্যবহার করে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন। খানা-খন্দগুলো মেরামত করে চলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে পথ প্রশস্ত করা হচ্ছে।
ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি বেলাল উদ্দিন সিকার বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের এলাকার রাস্তা উন্নয়নের বাইরে ছিল। রাজনৈতিক কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়ক সংস্কার হয়নি। আমরা নিজেদের উদ্যোগে চলাচলের জন্য সড়কগুলো সংস্কার করছি। আমরা আশা করি উপজেলা প্রশাসন পুরো এলাকা পরিপূর্ণভাবে ব্লক বা কার্পেটিং করে নতুন রূপে সংস্কার করবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা আসে। প্রশাসনের প্রতি আমরা এই পরিপূর্ণ সংস্কারের জন্য আবেদন জানাই।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম বলেন,হরিনাদীঘির দোকান সড়ক ব্যবহার করে আমাদের ব্যবসা চলে। দীর্ঘদিন খারাপ সড়কের কারণে চলাচলে সমস্যা হত। স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্যোগে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পেলাম। প্রশাসন যদি পুরো এলাকা পরিপূর্ণভাবে সংস্কার করে, তবে এলাকার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন অনেক সহজ হবে।
পাইন্দং শিবিরের সভাপতি সম্রাট আকবর বলেন, এলাকার সড়ক সংস্কারের জন্য নেতাকর্মীদের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা চাই উপজেলা প্রশাসন পুরো এলাকা পরিপূর্ণভাবে সংস্কার করুক, যাতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
হরিণাদিঘীয়া ইসলামি দাখিল মাদ্রাসার সুপার শামসুদ্দিন বলেন,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে। বর্ষার সময় সড়ক চলাচলের জন্য বিপদজনক হয়ে ওঠে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়, কিন্তু আমরা আশা করি সরকার সম্পূর্ণভাবে সড়ক সংস্কার করবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে।
এসময় সড়ক সংস্কার কাজে অংশ নেন সওদাগর, নয়ন, মোরশেদ সওদাগর, হোসেন সিকদার, মইন সিকদার, আরিফ, আবু বক্কর ও জাবেদসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা হোসেল বলেন, বর্ষার সময় সড়কে পানি জমে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত। দীর্ঘদিন কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। এবার যেটুকু সংস্কার শুরু হয়েছে, তার জন্য স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্যোগকে ধন্যবাদ। আমরা আশা করি প্রশাসন পুরো সড়কটিকে নতুনভাবে সংস্কার করবে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নিশ্চিত করবে।
স্থানীয়দের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তি বয়ে এনেছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় সড়কে পানি জমার সমস্যার সমাধানে এটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি, পুরো এলাকা পরিপূর্ণভাবে সংস্কার করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে পুনরায় সমস্যা তৈরি না হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সুন্দরপুর ইউনিয়নের প্রশাসক নজরুল ইসলাম বলনে, আমরা দীর্ঘদিন অবহেলিত সড়কগুলো উন্নয়নে আগে প্রাধান্য দিচ্ছি। হরিণাদিঘীর এই সড়কটির জন্য বরাদ্দ চেয়ে উপজেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অনুমোদন হলে পরবর্তী প্রক্রিয়া কাজ শুরু হবে