নিজস্ব প্রতিনিধি:
গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের গুজব তৈরির শাখা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (সিআরআই) এখন সেখানে পুনর্বাসিত হয়েছে। খবর মতে, নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনের একটি দোতলা ভবনে সিআরআইর নতুন কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সরাসরি এর দায়িত্ব পরিচালনা করছেন।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না হওয়ায় পুতুলকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি নিয়মিত এই কার্যালয় থেকে কাজ পরিচালনা করছেন এবং এখান থেকেই বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সিআরআইর কার্যক্রম সমন্বয় করা হচ্ছে।
গত ১১ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক পদ থেকে সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়। এর আগে থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছিলেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে দুটি মামলা করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো দাবি করছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির বিরুদ্ধে একের পর এক সাইবার আক্রমণের পেছনে সিআরআই সরাসরি কাজ করছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে তৈরি ভিডিও ক্লিপ, বেনামি ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তারা একটি সুপরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা।
সিআরআইর এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন ‘আওয়ামী কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ নামে পরিচিত গোষ্ঠীগুলিকে সংগঠিত করছে এবং টকশোর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, ইউটিউবার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। তাদের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলা, শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা সৃষ্টি করা এবং শেষ পর্যন্ত বিশালকর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে সিআরআইর কার্যক্রম শুরু হয়। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিকে প্রতিষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বাস্তবে গোপনে বিভিন্ন স্থান থেকে এর কাজকর্ম পরিচালিত হতো।