মোঃ হাচান আল মামুন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়নের পোমাংপাড়া হয়ে জেলা সদরের ভাই-বোনছড়া ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সড়কের ব্রিজ পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাওয়ার দুই বছর পার হলেও এখনও নির্মাণ হয়নি। এতে কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা সদর থেকে ভাই-বোনছড়া পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৫ কিলোমিটার কার্পেটিং এবং বাকি অংশ ইটসলিং করা হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় সড়কটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসীকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ি ছড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালখালী ও মেরুং ইউনিয়নের বিষ্ণু কার্বারীপাড়া, হাজাপাড়া, পোমাংপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের প্রধান যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সড়ক। ব্রিজ না থাকায় বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়লে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে। পাহাড়ি ঝুমচাষ ও কৃষিপণ্য মাথায় করে ছড়া পার হয়ে বাজারে নিতে হচ্ছে তাদের। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে এবং পচনশীল পণ্য নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষিরা।
বিষ্ণু কার্বারীপাড়ার বাসিন্দা অনিল ত্রিপুরা বলেন, “ব্রিজ না থাকায় আমাদের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্যও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা খুবই জরুরি।”
একই কথা জানান ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় ত্রিপুরা। তিনি বলেন, “প্রতিদিন পায়ে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। কৃষিপণ্য বাজারজাত করতেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই সড়কের দুটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শিকদার এন্টারপ্রাইজকে কাজ দেওয়া হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা কাজ চালিয়ে যেতে পারেনি। ফলে বরাদ্দ ফেরত যায় মন্ত্রণালয়ে।
এ বিষয়ে দীঘিনালা উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (আঃদাঃ) মো. ফজলুল হক বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ব্রিজ দুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরে নানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমি পুনরায় উদ্যোগ নিচ্ছি।”
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইনামুল হাছান বলেন, “সরেজমিনে গিয়ে ব্রিজের গুরুত্ব দেখেছি। স্থানীয় মানুষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে এলজিইডির সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।