১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভিক্ষাবৃত্তি করেও আব্দুল মোত্তালিব বাঁচিয়ে রেখেছেন মানবিকতা

সুখের এক সংসার ছিল আব্দুল মোত্তালিবের। ছিল স্ত্রী, ২ মেয়ে, বাড়ী ঘর, সম্পদ। শুধু ছিলনা অভাব অনটন। সেই মোত্তালিব জীবনের সায়াহ্নে এসে হয়ে পড়েছেন – নিঃস্ব, অসহায়। অভাব অনটন বাসা বেঁধেছে তার সুখের সংসারে। করেন ভিক্ষাবৃত্তি। আদিনিবাস ব্রাক্ষণবাড়িয়া ছেড়ে এখন থাকেন গাজীপুর চৌরাস্তায়। আশেপাশের এলাকাগুলোতে প্রতিদিন করেন ভিক্ষাবৃত্তি। ভিক্ষা করে যে আয় রোজগার হয় তাতে কোন মতন সংসার চলে।

 

একসময়কার স্বচ্ছল মোত্তালিবের অভাব অনটনে সংসার চললেও ভূলে যাননি মানবতা। ভিক্ষা করে যা আয় করেন তার সংসার খরচ বাদে বাকি টাকা দান করেন মসজিদ, মাদ্রাসায়। কখনো নগদ টাকা দান করেন কখনো সিমেন্ট, ইট, বালু কিনে দেন।

 

এ প্রসঙ্গে আব্দুল মোত্তালিব বলেন – “ এক সময় আমার সুখের সংসার ছিল। কোন অভাব অনটন ছিল না। ২ টা মেয়েকে মানুষ করে বিয়ে দিয়েছি। এরপর সম্পদের লোভে আমার মেয়েদের কে মেয়ের জামাইয়েরা অত্যাচার করতো। এজন্য নিজের স্থাবর – অস্থাবর যা কিছু ছিল সব তাদের নামে লিখে দিয়েছি। কিন্তু এরপর তারা আর আমার খোঁজ খবর রাখেনি। ভরণ পোষণ ও দেয় নি। বেঁচে থাকার জন্য নামতে হয়েছে ভিক্ষা-বৃত্তিতে। আমার বয়স হয়েছে। যে কোন সময় মারা যেতে পারি। এজন্য টাকা পয়সা সঞ্চয় করি না। ভিক্ষার টাকায় বাড়ি ভাড়া, খাবার খরচ বাদে যে টাকা অবশিষ্ট থাকে, তা দান করে দিই মসজিদ মাদ্রাসায়। কখনো নগদ টাকা দান করি আবার কখনো ইট, বালু, সিমেন্ট।

 

বর্তমান সময়ে মানবিকতা যেখানে হারাতে বসেছে, সেখানে আব্দুল মোত্তালিব যেন আলোকবর্তিকা। নিজের স্বচ্ছলতা অন্যের লোভের কাছে বলি দিলেও নিজে হয়ে যাননি অমানুষ। শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও সামর্থ্য অনুযায়ী সমাজের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। তার এমন মহানুভবতা আমাদের একটাই শিক্ষা দেয় – মানবতা সকল ব্যক্তির ভালবাসা, সহানুভূতি এবং সম্মানের মূল উৎস হওয়া উচিতদান মানবতার শ্রেষ্ঠ রূপ। হাজার বছর বেঁচে থাকুক আব্দুল মোত্তালিবেরা।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top