নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয় এ ভোট। আটটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষার্থীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এখন চলছে ফলাফলের অপেক্ষা। যদিও প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন, বড় কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।
ভোটের ব্যালট গণনা করা হবে ১৪টি মেশিনে, যার মধ্যে কিছু মেশিন ঘণ্টায় ৫০০০ এবং কিছু মেশিন ঘণ্টায় ৮০০০ পাতা স্ক্যান করতে সক্ষম। ভোটের ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন থেকে ঘোষণা করা হবে। নিয়ম অনুযায়ী, বিকাল ৪টার পর আর কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, তবে লাইনে থাকা শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পেরেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জানিয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই। তিনি বিকাল ৩টার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে বলেন, ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট হয়েছে। কার্জন হলে এক ভোটারকে ভুলক্রমে দুটি ব্যালট দেওয়া হয়েছিল, তবে সঙ্গে সঙ্গে ওই পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে নির্বাচনকে ঘিরে কিছু অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা। ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ভোটের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা হয়েছে। শিবির সমর্থিত জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত জিএস প্রার্থী খায়রুল হাসান জানান, ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে মন্তব্য করেছেন এবং ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন’-এর দাবি জানান। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার জানান, আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে। প্রতিরোধ পর্ষদের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেছেন, প্রগতি পক্ষের শক্তিগুলো জয়ী হবে। স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেন অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে তার ভোট কমানোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে কার্জন হলে সংবাদ সংগ্রহের সময় চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম অচেতন হয়ে পড়েন এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভোটকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়, দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা। টিএসসি এলাকায় ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ।
ডাকসু নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩ ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার। ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ৬২ জন নারী। এছাড়া ১৮টি হলে মোট ২৩৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী।