মোঃ সাজেল রানা, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট-পাটগ্রাম মহাসড়ক যেন এক মরণফাঁদ। প্রতিনিয়ত এই সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। ছাত্র-শিক্ষক, দিনমজুর থেকে শুরু করে নবীন-প্রবীণ—কেউই এই সড়কে নিরাপদ নয়। বেহাল দশা, অপরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থাপনা এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা—এই তিন কারণেই দুর্ঘটনার হার দিন দিন বাড়ছে।
প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কের বেহাল দশা এই অঞ্চলের মানুষের জন্য এক নিত্যদিনের দুর্ভোগ। বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখনো মাত্র দুই লেনের। ফলে দ্রুতগতির ট্রাক ও বাসের সঙ্গে ছোট যানবাহন এবং পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। আন্তঃসংযোগকারী রাস্তাগুলোর মিলনস্থানে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই।
সম্প্রতি, সরেও বাজারে বেপরোয়া গতির ট্রাকের চাপায় একজন মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন এবং আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন মেরাজ (২২), অনিক (২২), মিজানুর (৩৫)-এর মতো অনেক তরুণ, এমনকি প্রবীণ ও শিশুরাও। এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো জনগণের মাঝে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এবং ‘সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত চাই’-এর মতো বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে চত্বর নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করা হলেও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বাজেট বরাদ্দের পরিমাণও অপ্রতুল।
স্থানীয় সড়ক বিভাগকে এই দুর্ঘটনার দায়ভার নিতে হবে। জনগণের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত এই মহাসড়কের উন্নয়ন ও সংস্কার করা অপরিহার্য। প্রতিটি আন্তঃসংযোগ রাস্তায় চত্বর নির্মাণ এবং চার থেকে আট লেনের মহাসড়ক নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি।