জয়নাল আবেদীন জহিরুল, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের ছাতারগর গ্রামের কৃতী শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার আঁখির পাশে দাঁড়িয়েছে মধ্যনগর উপজেলা প্রেসক্লাব।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আঁখি এ বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় মহিষখলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। একাদশ শ্রেণিতে নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে চান্স পেয়েছে। ছোটবেলা থেকেই অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী প্রতিটি ক্লাসেই ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। দারিদ্র্য পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও নানা প্রতিকূলতায় পড়াশোনা চালিয়ে গেছে।
আঁখির এ মেধা ও সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে মধ্যনগর উপজেলা প্রেসক্লাব সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে মধ্যনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিসবাহ আঁখির বাড়িতে গিয়েছেন, তার খোঁজ খবর নিয়েছে, আঁখির আগামীর স্বপ্ন গুলো শুনেছেন।
আঁখি জানায়, ছোট বেলা থেকেই আমার স্বপ্ন আমি একজন ডাক্তার হতে চাই। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। পড়ার শুরু থেকেই আমাকে অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করেছে। আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আমার পাশে দাড়িয়েছে। আপনারাও আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন এজন্য আপনাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আঁখির বাবা জামাল মিয়া জানান, আমার মেয়ের উচ্চশিক্ষা ও তার স্বপ্ন পূরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এগিয়ে এলে আমার মেয়েটা তার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবে। আমি একজন দরিদ্র মানুষ। জীবিকার তাগিদে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে আয় রোজকার করার চেষ্টা করছি। ঢাকা গিয়ে যে আয় করি তা আমার পরিবারের ভরণপোষণ করতে হয়, আমার মেয়েটার খরচ জোগাড় করে চালাতে হয়।
তাছাড়া মেয়েটারে আগে মহিষখলা স্কুলে পড়াইতাম স্যার এতো টাকা পয়সা নিতো না প্রাইভেট পড়াইতেও স্যাররা এতো টাকা নিতো না। এখন নাকি কলেজে গেলে সাইন্স নিয়ে পড়াইতে গেলে প্রাইভেট পড়াইতে হবে বেশি টাকাও লাগবো বেশি। আমি এসব টাকা পয়সা কেমনে দিমু নাকি আমার মেয়েটার পড়াশোনা হবে না এটা নিয়ে খুব টেনশনে আছি। আঁখির বাবা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুনছি আপনারা যারা সাংবাদিক আছেন তারা যদি আমার মেয়েটার বিষয়ে সরকারের কাছে তুলে ধরতেন তাহলে সরকার সাহায্য করতে পারতো আমার মেয়েটা পড়াশোনা করতে পারতো।
মধ্যনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিসবাহ বলেন, আমরা শুনেছি আপনার মেয়ে আঁখি খুব মেধাবী শিক্ষার্থী। আমরা তার জন্য সামান্য উপহার নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। তিনি তার বাবার উদ্দেশ্যে বলেন আপনি মেয়েটার পড়াশোনা চালিয়ে নেন আমাদের প্রেসক্লাসব আপনার পাশে সব সময় আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে। তাছাড়া আমরাও তার বিষয়গুলো বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
শিক্ষক ও স্থানীয়রা মনে করছেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে সমাজের সবাইকে দাঁড়াতে হবে। এতে শুধু একজন শিক্ষার্থী নয়, গোটা সমাজ উপকৃত হবে