৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

‎পবিপ্রবিতে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত

মোঃ ফাহিম,পবিপ্রবি প্রতিনিধি:

‎পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) তে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির পবিপ্রবি শাখা।

‎শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কনফারেন্স হলে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়। শুরুতে পবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জান্নাতিন নাইম জীবন নবাগতদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এরপর শাখার পক্ষ থেকে নবীন শিক্ষার্থীদের হাতে রজনীগন্ধা ও উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি কলতান শিল্পীগোষ্ঠী মনোমুগ্ধকর ইসলামিক সংগীত পরিবেশন করে।

‎অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ রাফি, ডাকসুর আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক হাফেজ মো. সাখাওয়াত জাকারিয়া এবং বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম মুসতাকিম, ফারিয়া তাহসিন, তৌসিফ মুসতাকিম এবং হাসিফা নাজনীন হেনা।

‎প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
তিনি দীর্ঘ বক্তব্যে নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,‎“আজকের নবীন শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ স্থপতি। তোমরা যদি জ্ঞান, চরিত্র, আদর্শ ও নৈতিকতার আলোয় নিজেদের জীবন গড়ে তোলো, তবে একদিন এই দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে। শিক্ষা কখনো কেবল সার্টিফিকেট অর্জনের মাধ্যম হতে পারে না; বরং শিক্ষা হতে হবে আত্মশুদ্ধি, দায়িত্ববোধ ও মানবকল্যাণের হাতিয়ার। উচ্চশিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে গবেষণা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং নৈতিক নেতৃত্বের সমন্বয়ে তোমাদের সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

‎বিশ্ব রাজনীতির অস্থিরতা, সমাজে নৈতিক অবক্ষয় কিংবা অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ— যে কোনো পরিস্থিতিতেই একজন শিক্ষার্থীকে দৃঢ় মনোবল ও সততার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়। তোমরা ভবিষ্যতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, কিন্তু মনে রেখো— যোগ্যতা ও নৈতিকতার সমন্বয় ছাড়া প্রকৃত সফলতা সম্ভব নয়।

‎বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির সবসময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণ, নেতৃত্ব বিকাশ ও নৈতিক চেতনা জাগ্রত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তোমাদের জন্য রয়েছে নানা শিক্ষামূলক কার্যক্রম, গবেষণা সুযোগ এবং সামাজিক উদ্যোগ। শিবির চায় তোমরা কেবল নিজেদের জন্য নয়, বরং দেশের উন্নয়ন, সমাজের পরিবর্তন ও মানবতার কল্যাণে অবদান রাখো।

‎আমি বিশ্বাস করি— আজ যারা নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে এই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো, তারাই আগামী দিনে আদর্শ নাগরিক, সৎ পেশাজীবী এবং দেশপ্রেমিক নেতা হয়ে উঠবে। তোমাদের ওপর আমাদের পরিবার, সমাজ ও দেশের অগাধ প্রত্যাশা রয়েছে। এই প্রত্যাশা পূরণে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি চরিত্র গঠনকেও সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।”

‎এছাড়াও অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ট্রেজারার অধ্যাপক আব্দুল লতিফ। নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,‎“বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে সঠিক লক্ষ্য স্থির করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু ভালো রেজাল্ট নয়, সততা, মানবিকতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তোমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, তবেই তোমরা দেশ ও সমাজের প্রকৃত সম্পদে পরিণত হবে।”

‎ডাকসুর আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক হাফেজ মো. সাখাওয়াত জাকারিয়া নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন,‎“বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুটা যেন হয় ইতিবাচক উদ্যোমে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি উপযোগী সংগঠন, নেতৃত্বগুণ এবং এক্সট্রা-কারিকুলার কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে নিজেদের বিকশিত করতে হবে।”

‎সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় সফলভাবে সম্পন্ন হয় নবীনবরণ অনুষ্ঠান। নবীনদের পদচারণায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুম।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top