মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে নীলফামারীতে মাসব্যাপী বিনামূল্যে ছানি অপারেশন ও চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প শুরু করেছে দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটি। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা শহরের কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়।
দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটির অর্থায়নে এবং মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই ক্যাম্পে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৬ শতাধিক রোগীর বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করা হবে। পাশাপাশি রোগীদের চোখের অন্যান্য সমস্যা শনাক্তকরণ, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন— “চোখের আলো হারানো মানুষের কষ্ট অনন্য। তাদের আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা এক মহৎ উদ্যোগ। দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটি ও মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের এই কার্যক্রম দরিদ্র মানুষের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালাবে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন—“স্বাস্থ্য খাতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি এনজিওগুলোর এমন কার্যক্রম সমাজে অনুকরণীয় ভূমিকা রাখে। এ ধরনের সহযোগিতা মানবিক সমাজ গঠনে সহায়ক।”
মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের ডিজিএম জাকির হোসেন জানান—“দীর্ঘদিন ধরে আমরা চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। দোস্ত এইডের সহযোগিতায় এত বড় পরিসরে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে। আমরা চাই প্রত্যেক রোগী যেন উন্নত সেবা পান।”
দোস্ত এইড বাংলাদেশ সোসাইটির প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কায়েস বলেন—
“অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। মাসব্যাপী নীলফামারীর প্রতিটি উপজেলায় এ ধরনের ক্যাম্প পরিচালিত হবে। আমাদের উদ্দেশ্য—অর্থাভাবে যারা চিকিৎসা নিতে পারছেন না, তারা যেন চোখের আলো ফিরে পান।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন দোস্ত এইডের ভলান্টিয়ার আব্দুল জব্বার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রায়হান উদ্দিন, দোস্ত এইডের শিক্ষা অফিসার শওকত মিয়া, মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
এই মাসব্যাপী কার্যক্রমের মাধ্যমে নীলফামারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের শত শত অসহায় মানুষ চোখের আলো ফিরে পাবেন। ফলে তাদের কর্মক্ষমতা, জীবনমান ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বিনামূল্যে চিকিৎসা উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে দারিদ্র্য বিমোচনেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।