মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় চার লাখ মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন, এরমধ্যে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু ঘটে। সর্পদংশনকে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে এর প্রতিরোধ ও সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে নীলফামারীতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায়।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক সর্পদংশন সচেতনতা দিবস-২০২৫ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু বিন হাজ্জাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
সভায় সর্পদংশনের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুল মতিন।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে সর্পদংশনের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত এন্টিভেনম ইনজেকশন মজুদ রয়েছে, যা ভারত থেকে আমদানি করা হয়। তবে সঠিক সময়ে হাসপাতালে না আসা এবং ওঝা, সাপুড়ে বা কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সময়ক্ষেপণের কারণে অনেক প্রাণহানি ঘটে।
ডা. মতিন সর্পদংশনের প্রাথমিক করণীয় সম্পর্কে বলেন—
কামড়ানোর পর আক্রান্ত স্থানে অবিলম্বে গামছা বা কাপড় দিয়ে হালকা করে বাঁধতে হবে।
রোগীকে আতঙ্কিত না করে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে।
অযথা কেটে রক্ত বের করা, বিষ চুষে নেওয়া বা ঘরোয়া চিকিৎসা করা যাবে না।
সভায় বক্তারা জানান, সর্পদংশনে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব। সময়মতো হাসপাতালে এলে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
‘দ্রুত ব্যবস্থা নিন, জীবন বাঁচান’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এ সভায় জেলার চিকিৎসক, সেবিকা, ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গ্রামীণ জনপদে সর্পদংশন মোকাবেলায় এন্টিভেনম সহজলভ্য করা, প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ও ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি এখন সময়ের দাবি।