৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

দেখাই যায় না প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাদা বক

মোঃ সোহাগ হোসেন,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

আমাদের বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশাল জায়গা দখল করে আছে বিভিন্ন রকমের বক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাদা বক দেখাই যায় না। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, সহ বিভিন্ন উপজেলায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখন আর খাবারের সন্ধানে বিল-নদী জলাশয়ে আসা দেশিয় কানি বক, সাদা বক। জলবায়ু পরিবর্তন, গাছপালা নিধন, আবাদি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার ও শিকারীদের অত্যাচারের কারণে বিলুপ্তির পথে এই প্রানি।

জানা গেছে, সম্প্রতি চলনবিলে দেখা মিললো এক ঝাঁক দেশীয় কানি ও সাদা বকের। বনভূমি উজাড় আর কিছু অসাধু পাখি শিকারীদের দৌরাত্ন্যে হারিয়ে যেতে বসেছে এই বক। কখনও মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলা, কখনও দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের সবুজ গালিচার সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিত ঝাঁকে ঝাঁকে এই সাদা বক। আবার কখনও দলবদ্ধ হয়ে উড়তে উড়তে একসময় মিশে যেত দূর আকাশ নিলীমায়। এক বিল থেকে আর এক বিলে অথবা দিন শেষে কোন বন কিংবা বাঁশঝাড়ে নিজ নীড়ে ফিরে যেত এই বকগুলো। প্রাকৃতিক নান্দনিক পাখি বক, বকের কলরব এখন শুধুই স্মৃতি। আরো জানা গেছে, আমাদের দেশে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির সাদা বক। আকারে ৪৫ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পা ও লম্বা ঠোঁট ছাড়া এদের সারা দেহ সাদা পালকে আবৃত। বিলের মাঝে সুবজ ঘাসে ওঁৎ পেতে আছে পাশের ঝিলে মাছ শিকারের আশায়। এ যেন জলাবায়ু পরিবর্তন আর বনভূমি উজাড়ের কারণে বক যেন আমাদের জনবসতি থেকে অভিমানেই দুরে চলে গেছে। স্থানীয়রা জানান, এক সময় তাড়াশের চলন বিলের, বিভিন্ন বিলে প্রচুর বকের আনাগোনা ছিল। সন্ধ্যা হলেই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠতো চারপাশ। তবে এখন সেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আর চোখে পড়ে না।

তাড়াশ উপজেলার মাঝদক্ষিনা কে.আর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মাহাতো জানান, এক সময় খেত-খামারে কানি ও সাদা বক দেখা গেলেও এখন চোখে পড়ে না। মাঝে মধ্যে দুই একটা দেখা গেলেও শিকারিরা সেগুলো ধরে বিক্রি করে দেন।

তাড়াশের দেশীগ্রামের আব্দুল হাকিম ও সিংগাড়পাড়া গ্রামের বুলবুল আহমেদ তালুকদার জানান, আগে চলন বিলে বন্যা কালীন সময়ে বিপুল পরিমাণ বক দেখা যেত। বর্তমানে শিকারিদের অত্যাচারে বকের আনাগোনা অনেকটাই কমে গেছে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, বক সাধারণত মাছ, পোকামাকড়, শামুক, ঝিনুক ও ব্যাঙ খেয়ে বেঁচে থাকে। মিঠাপানির জলাশয় সহ বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর, পুকুর, ডোবায় এদের দেখা যায়। আমাদের দেশে সাদা বকের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। শষ্য খেতে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার ও বিভিন্ন বিল ভরাট এবং পানি না থাকার কারণে বকের সংখ্যা কমে গেছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top