মোঃ হাছান আল মামুন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার ১নং মেরুং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত শান্ত-সুনিবিড় গ্রাম মধ্য বোয়ালখালী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নদীমাতৃক পরিবেশে ঘেরা এই সমাজটি বহু বছর ধরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পরিশ্রম ও সততার প্রতিচ্ছবি হয়ে আছে।
গ্রামটিতে প্রায় ২৪০টি পরিবার বসবাস করে। অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি কিছুসংখ্যক মানুষ ড্রাইভিং, ছোটখাটো ব্যবসা ও দিনমজুর পেশায় জড়িত। গ্রামের পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে বৃহত্তর মাইনি নদী, যা এখানকার মানুষের জীবিকার অন্যতম অবলম্বন।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকেও মধ্য বোয়ালখালী তুলনামূলকভাবে এগিয়ে। এখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মহিলা মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি সেন্টার হাসপাতাল এবং একটি জামে মসজিদ রয়েছে। গ্রামের প্রত্যেক ঘরে এখন বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে, যা স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
তবে এখনও গ্রামীণ জীবনে রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা। এলাকাটিতে কোনো বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা নেই, ফলে এখানকার যুব সমাজের একটি বড় অংশ বেকারত্বে ভুগছে। সময়ের বেশিরভাগটা তারা অনর্থকভাবে পার করে দেয়। স্থানীয়রা বলছেন, “যদি এখানে কোনো ছোট বা মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যায়, তবে কর্মসংস্থান বাড়বে, যুব সমাজ কর্মমুখী হবে এবং জীবনমানের দৃশ্যমান উন্নতি ঘটবে।”
এলাকার মানুষ সামাজিকভাবে বেশ ঐক্যবদ্ধ। তারা গ্রামীণ উন্নয়ন, শিক্ষা বিস্তার ও পরিবেশ সংরক্ষণে নিজেদের উদ্যোগে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে রাস্তা-ঘাট সংস্কার, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ, এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মমুখী প্রকল্প গ্রহণের দাবি এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
সবমিলিয়ে, মধ্য বোয়ালখালী একটি সম্ভাবনাময় গ্রাম, যেখানে প্রকৃতি, পরিশ্রম আর স্বপ্ন মিলেমিশে এক অনন্য জীবনচিত্র তৈরি করেছে। যথাযথ পরিকল্পনা ও সরকারি নজরদারি পেলে এই সমাজ একদিন হতে পারে দীঘিনালার উন্নয়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।