নিজস্ব প্রতিনিধি:
সারা দেশে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে দেওয়া হবে টাইফয়েড টিকা—এই টিকা নিয়ে কোনো ধরনের ভয় বা উদ্বেগের কারণ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
তিনি জানান, এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষিত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই টিকার কোনো পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হচ্ছে না, বরং এটি উন্নত ও কার্যকর একটি টিকা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, এই টিকায় প্রোটিন ও শর্করা উভয় উপাদান থাকায় শরীরে কার্যকরভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা টাইফয়েড প্রতিরোধে অধিক সক্ষম।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার সবসময় শিশুদের নিরাপদ ও কার্যকর টিকাদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। সামান্যতম ঝুঁকি থাকলেও সরকার কোনো টিকা অনুমোদন দেয় না। টাইফয়েড টিকাসহ সব ইপিআই টিকা যথাযথ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ ও পরিবহন করা হয়, তাই এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো কারণ নেই।
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি-২০২১ এর তথ্য তুলে ধরে ডা. সায়েদুর বলেন, বিশ্বজুড়ে সে বছর ৭০ লাখের বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং ৯৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যার একটি বড় অংশ দক্ষিণ এশিয়ায়। বাংলাদেশে প্রায় আট হাজার মানুষ টাইফয়েডে মারা যান, তাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশের বয়স ছিল ১৫ বছরের নিচে।
তিনি জানান, বর্তমানে টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। ফলে ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েডের ঝুঁকি বাড়ছে। টিকা নেওয়ার মাধ্যমে এই সংক্রমণ অনেকাংশে কমে যাবে, অ্যান্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ হ্রাস পাবে এবং শিশু মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
টিকা গ্রহণের পর সামান্য প্রতিক্রিয়া হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ইনজেকশনের স্থানে লালচে ভাব, হালকা ব্যথা, মৃদু জ্বর বা ক্লান্তি দেখা দিতে পারে, তবে এসব স্বাভাবিক ও সাময়িক। অনেক সময় টিকার আগে বা পরে মানসিক ভীতিজনিত কারণে কিছু কিশোর-কিশোরী অসুস্থতা বোধ করতে পারে, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বলা হয়—এর সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক নেই।
শেষে তিনি নিশ্চিত করেন, এই টাইফয়েড টিকায় শরিয়তবিরোধী কোনো উপাদান নেই এবং এটি সৌদি হালাল সেন্টার কর্তৃক হালাল সনদপ্রাপ্ত।