মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, মুরাদনগর প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের প্রশাসনিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণার দাবি এখন সময়ের অনিবার্য বাস্তবতা। এ কারণে কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা করা সময়ের একান্ত দাবি।
৯ অক্টোবর ২৫ ইং বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টায় মাদরাসায়ে নূরে মাদীনা নহল চৌমুহনী বাজারে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, মুরাদনগর উপজেলা শাখা’র আমেলা বৈঠকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি করেন উপজেলা জমিয়তের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহমান আল মুজাফফার ।
এ সময় তিনি বলেন ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কুমিল্লা সব দিক থেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ অঞ্চল। দেশের অন্যতম প্রাচীন জনপদ হিসেবে কুমিল্লা বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। এ জেলার লালমাই-ময়নামতি পাহাড়, ঐতিহাসিক স্থাপনা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মান সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনা এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কুমিল্লাকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জনপদে পরিণত করেছে।
কুমিল্লা প্রাচীন সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল। ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী থেকে শুরু করে লালমাই-ময়নামতি, শালবন বৌদ্ধবিহার, কোটবাড়ির প্রত্ননগরী, নবাব ফয়জুন্নেছা, কাজী নজরুল ইসলামের পদচিহ্ন- সব মিলিয়ে কুমিল্লা বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার ধারক ও বাহক। এখান থেকেই বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার উন্নয়ন মডেলের সূচনা হয়েছিল “কুমিল্লা মডেল” নামে, যা পরবর্তীতে সারাদেশে দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এমন ঐতিহ্যবাহী জনপদ আজও জেলা পর্যায়ে আটকে আছে-এটা কেবল প্রশাসনিক নয়, মানসিক বঞ্চনাও ।
এসময় বক্তারা আরও বলেন বর্তমানে কুমিল্লা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দু। কুমিল্লা EPZ, শিল্পাঞ্চল, কৃষি উৎপাদন, এবং রপ্তানি কর্মকাণ্ড জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে প্রশাসনিক ও জনসংখ্যাগত চাপও দিন দিন বাড়ছে। এই বাস্তবতায় বিভাগীয় প্রশাসন গঠন হলে উন্নয়ন কার্যক্রম আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে। কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার মাধ্যমে শুধু একটি প্রশাসনিক কাঠামোই গড়ে উঠবে না, বরং এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও আত্মপরিচয়ের মর্যাদা রক্ষা পাবে।
আমাদের প্রত্যাশা—সরকার জনগণের এই ন্যায্য দাবিকে সম্মান জানাবে এবং দ্রুত “কুমিল্লা বিভাগ” ঘোষণা করবে। এটাই সময়ের দাবি, সর্বস্তরের জনগণের দাবি, কুমিল্লাবাসীর প্রানের দাবি।