মোঃ বাদশা প্রামানিক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর ভাঙ্গন রোধ জরুরী কাজে ব্যবহৃত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-র খোয়া-যাওয়া জিও ব্যাক রাতের আঁধারে বাজারের সময় আটক করেছে জনতা। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যানে ৩১০ টি জিও ব্যাক নিয়ে যাওয়ার সময় ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে,সাম্প্রতি কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে, তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এর ফলে ডিমলা উপজেলা পশ্চিম ছাতনাই ও পূর্ব ছাতনাই দুটি ইউনিয়নের নদী রক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভাঙ্গনের উপক্রম হয়। উপজেলা প্রশাসন , ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীবৃন্দ ও স্থানীয় জনতা মিলে বন্যা মোকাবেলায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাধঁ রক্ষা করতে সামর্থ্য হয়। এ সময় ডালিয়া পাউবোর কর্মকর্তারা ঔ দুটি ইউনিয়নের একাধিক স্থানে জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পিচিং করার জন্য প্রায় দুই হাজার জিও ব্যাগ সরবরাহ করেন। ভাঙ্গল রোধে জরুরী কাজের সরবরাহকৃত জিও ব্যাগের মধ্যে প্রায় ৫ শত ব্যাক খোয়া গিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় । পাউবো কর্তৃপক্ষ খোয়া যাওয়া জিও ব্যাগের মধ্যে ১শত ১০টি জিও ব্যাগ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। বাকী গুলো উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
গত শুক্রবার রাতে খোয়া যাওয়া মধ্যে ৩১০ টি জিও ব্যাগ ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যান যোগে জল ঢাকায় পাচারে সময় ডিমলা সদর থেকে আাটক করে জনতা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আটক জিও ব্যাগগুলি ডালিয়া পাউবোর খোয়া যাওয়া সরকারী জিও ব্যাক। জিও ব্যাগগুলি পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের যুবদলের সাধারন সম্পাদক ও ওই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে মো,মনির হোসেনের। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে বিক্রির জন্য জলঢাকা উপজেলায় ভ্যান গাড়ি যোগে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জনতার হাতে আটক জিও ব্যাগগুলি রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো,ইমরানুজ্জামানের নির্দেশে ডিমলা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো, আবু তালেবের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
ডিমলা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আবু তালেব আটক জিও ব্যাগ নিজ হেফাজতে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো,সালামত ফকির জানান, পূর্ব ছাতনাইয়ের ঝাড়সিংহেশ্বরে সম্প্রতি বন্যায় ভাঙ্গন রোধে জরুরী কাজে ব্যবহারের সময় বেশ কিছু জিও ব্যাগ খোয়া যায় সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আটক হওয়া জিও ব্যাগ গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিনা যাচাই করে দেখা হচ্ছে ।
অভিযুক্ত মনির হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পরামর্শে সম্প্রতি তিস্তার ভাঙ্গন রোধে জরুরী কজে ব্যবহারের জন্য আমি জলঢাকার একজন ঠিকাদারের নিকট থেকে জিও ব্যাগগুলি কিনে নিয়েছি। কাজে না লাগায় সেগুলি শুক্রবার ফেরত দেয়ার জন্য জলঢাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার,মো, ইমরানুজ্জামান জানান, তিস্তার ভাঙ্গন রোধের কাজে ব্যবহৃত জিও ব্যাগ জনতা কর্তৃক আটকের বিষয়টি শুনেছি । আটক জিও ব্যাগগুলি সদর ইউপি চেয়াসম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে মালিকানার সঠিক কাগজ পত্র যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।