কামরুল ইসলাম শাওন, মহিপুর (কুয়াকাটা) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর মহিপুরে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলম সন্যমতের বিরুদ্ধে চুরিকৃত রূপার গহনা ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মহিপুর সদর ইউনিয়নের মিঠুন গিনি হাউজ থেকে ৩০০’শ ভরি রূপার গহনা চুরির ঘটনা ঘটে। সেসব চুরিকৃত রূপার গহনাসহ পুলিশ চোরচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেন। চুরিকৃত গহনা মহিপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেসব বিক্রিকৃত গহনা কৌশলে পুলিশের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেন স্থানীয় যুবদল নেতা আলম।
গেল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে মহিপুর সদর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা পাখি আক্তার নামে এক নারীর বাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী যুবদল নেতা আলম সন্যমত পুলিশের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় দুই ভরি রূপার গহনা ও নগদ দুই হাজার পাঁচশ টাকা হাতিয়ে নেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাখি আক্তার স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু রূপার গহনা ক্রয় করেন। পরে আলম সন্নামতের মাধ্যমে জানতে পারেন, গহনাগুলো চুরি করা। এরপর আলম সন্নামত তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গহনাগুলো নিজের কাছে নিয়ে নেন এবং অতিরিক্তভাবে নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা পুলিশকে দেওয়ার কথা বলে আদায় করেন বলে অভিযোগ করেন পাখি আক্তার।
৪ মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটি কথোপকথনের অডিওতে শোনা যায়, আলম সন্যমত গহনাগুলো মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব আকন ফিরোজের কাছে জমা দিয়েছেন। ফিরোজও অডিওতে বিষয়টি স্বীকার করেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলম সন্যমতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
অভিযুক্ত আইয়ুব আকন ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “বিভিন্ন কৌশলে টোপ দিয়ে জিনিসগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।” পরে প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলে ফোন সংযোগ কেটে দেন এবং পরবর্তীতে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কথা বলতে রাজি হননি।
মহিপুর থানা যুবদলের সভাপতি সিদ্দিক মোল্লা বলেন, “বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপিতে কোনো অপরাধীর ঠাঁই নেই।”
মহিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাজাহান পারভেজ বলেন, “আমি মাত্র বিষয়টি জানতে পেরেছি। কাউকে সালিশের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, মহিপুর থানা পুলিশ বেশ কিছু চোরাই মালামাল উদ্ধার করছে। এর বাইরে কেউ কেন মালামাল বা গহনা জমা দেয়নি। পুলিশের নাম বলে যদি কেউ উদ্ধার করে সেটা অবশ্যই প্রতারণা। অভিযোগ পেলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ নিয়মিত কাজ করছে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।