সিহাব আলম সম্রাট, রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ৪নং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের শালঘড়িয়া এলাকায় অবস্থিত নবী এন্ড ব্রাদার্স এগ্রো ফিড মিলে ঘটেছে এক দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা। শান্ত গ্রামীণ পরিবেশে হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় এলাকায় এখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতের কোনো এক সময়ে ঘটে যায় এই চুরি, আর ১৫ অক্টোবর বুধবার সকাল ৮টার দিকে মিলের ফোরম্যান ইকবাল হোসেন মিন্টু বিষয়টি জানতে পারেন।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো অফিসের কাজ শেষে অফিস সহকারী মোঃ দেলোয়ার হোসেন রাতে অফিস কক্ষে তালা দিয়ে চলে যান। কিন্তু সেদিন ম্যানেজার শাহিনুর ইসলাম রাজশাহী কোর্টে বিশেষ কাজে থাকায় অফিসে আসেননি। পরদিন সকালে প্রোডাকশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন মিন্টু অফিসে এসে দেখেন, দরজার তালাটি ভাঙ্গা সাথে সাথেই তিনি ম্যানেজার শাহিনুর ইসলামকে খবর দেন।
খবর পেয়ে ম্যানেজার শাহিনুর ইসলাম দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে বিষয়টি এমডি নুরুল ইসলামকে জানান। পরে এমডি নুরুল ইসলাম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুর্গাপুর থানাকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম ও তদন্ত ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে মিল ও অফিস কক্ষ পরিদর্শন করেন।
এদিকে, ঘটনার পর নৈশ্য প্রহরীদের বক্তব্যে এসেছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। মিলের নৈশ্য প্রহরী আকরাম আলী জানান, “রাতে তালাটা সেভাবে খেয়াল করিনি আমি। রাত দুইটার দিকে প্রচন্ড ঘুম পেলে ঘুমিয়ে পড়ি, আর সকাল ছয়টার দিকে জাগা পেয়ে বারান্দার লাইট বন্ধ করে মেন গেটের প্রহরীকে বলে আমি বাসায় চলে যায়।” অন্যদিকে মেন গেটের প্রহরী আবুল খায়ের বলেন, “ভেতরের দিকটা আকরাম দেখে সকালে সে বলেছে বাসায় যাবে, এরপর আমি কিছু জানি না আমি সারা রাত মেন গেটে ছিলাম।”
ম্যানেজার শাহিনুর ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন অফিসের হিসাব-নিকাশ শেষ করে তালা দিয়ে এমডি স্যারের সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু মঙ্গলবার রাজশাহী আদালতে কাজ থাকায় অফিসে যেতে পারিনি। সকালে ফোন পেয়ে অফিসে এসে দেখি চুরির ঘটনা ঘটেছে।”
এ বিষয়ে এমডি নুরুল ইসলাম জানান, “এখন পর্যন্ত কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে সন্দেহ করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার পরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, চুরির ঘটনাটি বেশ পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। অফিস কক্ষের তালা ভাঙার ধরন ও ঘটনার সময়সূচি দেখে ধারণা করা হচ্ছে—চোরেরা মিলের ভেতরের পরিস্থিতি ভালোভাবেই জানত।