ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ক্যাম্পাসে মন্দির স্থাপনের দাবি বাস্তবায়ন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে মন্দির স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো রেজাউল করিমের নিকট স্মারক লিপি জমা দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন মিছিলে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা একাত্মতা পোষণ করে অংশ নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘বাংলাদেশে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগের অধিকার রাখে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা আসন্ন কালীপূজা পালন করতে চাইলেও প্রশাসন এখনো অনুমতি দেয়নি, যা ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো মন্দির বা উপাসনালয় না থাকা ধর্মীয় বৈচিত্র্যের অভাব নির্দেশ করে। তাই আমাদের দাবি, কালীপূজার অনুমতি দেওয়া হোক এবং সনাতন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্থায়ী মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হোক। সকল ধর্মের শিক্ষার্থীর মৌলিক অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সমানভাবে রক্ষা করা প্রয়োজন।’
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর আনজুম সাম্য বলেন, কয়েকশত বছর ধরে হচ্ছে পূজা। সেটাকে উত্তর ভারতের সংস্কৃতি কীভাবে বলেন? কিছুদিন পর অন্যান্য ধর্মাবলম্বী তাদের কেউ বাইরে সংস্কৃতির কথা বলবেন! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন নিজ নিজ ধর্মের পালন করতে পারে সেরা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে, আমরা ধরে নেবো, আপনারা নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীকে প্রমোট করতে চান। জবিতে মন্দির হবে, কালী পুজো অনুষ্ঠিত করবো। আমি মনে করি প্রতিটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রয়েছে। হিন্দু ভাইদের বলতে চাই, আপনাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ পথ ছাড়বেন না।
এ সময় শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ বলেন, ‘আমরা যে দেশে বাস করি এটি একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এদেশের মানুষ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান বিভেদ করে না। সব মানুষ ধর্ম পালনের অধিকার রাখে।’
এবিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘ধর্ম যার যার দেশ সবার। আমরা দেখেছি বিগত ১৭ বছর বিশেষ একটি মহল, একটি গোষ্ঠী এক কেন্দ্রিক রাষ্ট্র চালিয়েছিল। ধর্মীয়,রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক স্বাধীনতা ছিল না। হাসিনার পতনের জন্য শিক্ষার্থীরা, দেশের সর্বস্তরের মানুষ পথে নেমে এসেছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা দেখতে পাচ্ছি এক ফ্যাসিবাদের পতনের পর আর এক ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব ঘটছে। জবি শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু-মুসলিম সকল শিক্ষার্থী এক হয়ে আন্দোলন করে। জবিয়ানদের অধিকার আদায়ের জন্য পূর্বের মতো ভবিষ্যতেও হিন্দু মুসলিম সকল শিক্ষার্থী এক হয়ে কাজ করবে।’
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, আমি তোমাদের স্মারকলিপি জমা নিলাম।আমরা একটা মিটিং করে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে খুব শীঘ্রই আপডেট জানাবো।