মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডোমারে প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় কথিত প্রেমিক আশিকুর রহমানের (৩৮) ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন তিন সন্তানের জননী জহুরা বেগম (৩৮)। নিহত জহুরা বেগম ডোমার উপজেলার পাঙ্গাঁ মটুকপুর ইউনিয়নের মেলা পাঙ্গাঁ মাষ্টারপাড়ার রহিদুল হাসানের স্ত্রী এবং মৃত জহির উদ্দিনের মেয়ে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত আশিকুর রহমান একই ইউনিয়নের উত্তর ডাঙ্গা পাড়ার বজলার রহমানের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে। পরদিন শুক্রবার সকালে পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের ছোট বোন জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে আশিকুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ডোমার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি জানান, “বিভিন্ন সময় আশিকুর আমার বোনকে কু-প্রস্তাব ও প্রেমের প্রস্তাব দিত। বোন রাজি না হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে বারবার ভয়ভীতি দেখাতো। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে সে আমার বোনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। আমার বোন হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে আশিকুর রহমান দুই-তিনজন সহযোগী নিয়ে জহুরা বেগমের শয়নকক্ষের টিনের চালায় শব্দ করতে থাকে ও গালাগাল শুরু করে।
এসময় জহুরা বেগম ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ জানালে আশিকুর ক্ষিপ্ত হয়ে তার পেটে ও দুই পাঁজরে ধাঁরালো ছোরা দিয়ে একাধিক আঘাত করে পালিয়ে যায়।গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ৩টার দিকে জহুরা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, আশিকুর রহমান পূর্বে থেকেই নানা অজুহাতে জহুরা বেগমকে উত্যক্ত করতেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিশও হয়েছিল। সালিশে জহুরা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আশিকুর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের ধারণা, সেই ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ মাঠে অভিযান চালাচ্ছে।”
এদিকে, নিহত জহুরা বেগমের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিন সন্তানকে নিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। স্থানীয়দের দাবি—অপরাধীর দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।