২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দাঈগণের ব্যাপারে মন্তব্যে সংযমী কাম্য

দাওয়াতি ময়দানে আত্মনিয়োগকারীগণ , তাঁরা মানবজাতিরই অংশ, ফেরেশতা নন। সুতরাং তাদের মধ্যেও ত্রুটি-বিচ্যুতি, পাপ বা ভুল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু মনে রাখবেন , তাদের দাওয়াতের মাধ্যমেই হয়তো অসংখ্য হৃদয় হেদায়াতের আলোকরশ্মিতে উদ্ভাসিত হয়েছে , অগণিত মানুষ ইসলামের পথে ফিরে এসেছে। সম্ভবত সেই দাওয়াতের সওয়াবের উসিলায় তারা মহান রবের নিকট ক্ষমাপ্রাপ্ত হবেন। কিংবা ইখলাসপূর্ণ তাওবাহ ও অনুতাপের অশ্রুতে তাদের গুনাহসমূহ মুছে যাবে অনায়াসে।

অপরদিকে, যারা তাদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল, গালিমিশ্রিত বা মিথ্যা সমালোচনার ভাষা ব্যবহার করে, তারা নিজের অজান্তেই গীবত, অপবাদ ও মিথ্যাচারের গভীর গর্তে পতিত হচ্ছে। যার হিশাব কিয়ামতের ময়দানে হবে কঠোর ও ভয়াবহ।

মিথ্যা মন্তব্য করা কেবল নিন্দনীয়ই নয়, বরং আত্মার অশুদ্ধতার প্রকাশ। এটি মানুষের মর্যাদা ক্ষুন্ন করে, সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং নিজেকেও নৈতিক পতনের দিকে ঠেলে দেয়। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—

“হে মুমিনগণ! তোমরা এমন কোনো কথা অনুসরণ করো না, যার সম্পর্কে নিশ্চিত জ্ঞান নেই। নিশ্চয় কান, চোখ ও হৃদয়—সবকিছুরই জিজ্ঞাসাবাদ হবে।”
(সূরা আল-ইসরা, ৩৬)

বিবেচনা করুন—আপনার অসংযত ও মিথ্যা সমালোচনা কেবল দাঈ নয়, বরং নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষী মহলের জন্য হয়ে উঠছে এক গোপন সহায়তা। তাদের ইসলামবিরোধী প্রচারণায় আপনার তির্যক বাক্যই যেন জ্বালানি যোগাচ্ছে।

অতএব, হে প্রাজ্ঞ মানব! নিজ জবানকে সংযত রাখুন, অন্যের ত্রুটিকে রায় দেয়ার উপকরণে পরিণত করবেন না। অকারণ ও মিথ্যা মন্তব্য করে নিজের পরিণতি ভয়াবহ করবেন না।
স্মরণ রাখুন—ইসলামের ক্ষতি কখনও শত্রুর হাতে যতটা হয় না, তারচেয়ে অধিক হয় মুসলিমের অজ্ঞতা ও আবেগপ্রসূত অন্যায় ভাষায়।

তাই, দাওয়াতি কর্মীদের সমালোচনায় নয়—তাদের জন্য দোয়ার হাত তুলুন, তাদের ইখলাস ও আমলের দৃঢ়তার জন্য প্রার্থনা করুন। এটাই হবে এক সত্যিকারের দাঈ-মননের প্রকাশ, এক মুমিন হৃদয়ের পরিপূর্ণ শোভা।

আম্মার হোসাইন।
শিক্ষার্থী , ইসলামি আইন বিভাগ , আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top