তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
“মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৫।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে অংশ নেন প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন। সভার সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
আলোচনা সভায় বক্তৃতা দেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী, জেলা বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম, জেলা হেফাজতে ইসলামের নেতা জামাল আহমদ কাসেমী, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সম্পাদক নুরুল ইসলাম শেফুল, জেলা বিএনপি নেতা মতিন বখশ, জুলাই মঞ্চের আহ্বায়ক তানজিলা শিশির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা কাজী মনজুর এবং মিছবাহ আহমদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার, নিরাপদ গতি ও সড়ক শৃঙ্খলা মেনে চললে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি অনেকাংশে কমে আসবে। তারা সবাই সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জেলার সকল অফিস প্রধান, বিআরটিএ, সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ৬ জনের পরিবারকে মোট ২০ লাখ টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়, যা উপস্থিতদের মধ্যে এক আবেগঘন ও মানবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে।
তবে পরবর্তীতে এই অনুদান প্রদান নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জনমনে প্রশ্ন—যাঁরা প্রকৃত সড়ক দুর্ঘটনার শিকার নন, তাঁদের কেউ কেউ কীভাবে সরকারি এই অনুদানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন?
এ নিয়ে সামাজিক মহলে ক্ষোভ ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুদান প্রদানে স্বচ্ছতা ও যথাযথ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ন্যায্য সহায়তা পায়।
ফলে মানবিক সহায়তার এই উদ্যোগ যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনি অনিয়মের অভিযোগে নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুদান কার্যক্রম।
শেষ পর্যন্ত সবাই একমত হন—
“নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ জীবন—আমাদের অঙ্গীকার।