মোঃ নাঈম মল্লিক, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচলমহল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ আলম খোকনের বিরুদ্ধে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও বাস্তবায়নে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের একাধিক প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লাভলী ইয়াসমিন একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর, ২০২৫) সকালে তিন সদস্যের এই কমিটি সরজমিনে তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ আলম খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে ৪নং ওয়ার্ডের প্রকল্পগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:
কেবল ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই ৪নং ওয়ার্ডে ১৯টি প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ নামমাত্র বা সামান্য অংশ সম্পন্ন করে সরকারি বরাদ্দের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও ৪নং ওয়ার্ডে আরও পাঁচটি নতুন প্রকল্প দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে ওঠে।
উন্নয়ন কাজের এই ধারাবাহিক অনিয়ম ও অর্থ নয়ছয়ের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ খলিফা এবং সাধারণ সম্পাদকের দ্বারস্থ হন। তাঁরা গত ০৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) নিকট লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগপত্রে ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অনুমোদিত ও প্রেরিত প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য, অর্থ বরাদ্দের তালিকা এবং প্রস্তাবের ফরম সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগকারীরা পুরো বিষয়টি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।
লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লাভলী ইয়াসমিন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন— নলছিটি সমবায় কর্মকর্তা, সমাজসেবা অফিসার এবং নলছিটি এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
বুধবার সকালে এই তদন্ত কমিটি সরেজমিনে অভিযোগ ওঠা বিভিন্ন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ আলম খোকন অভিযোগের বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার না করে বলেন, “আমরা সরকারি বরাদ্দের টাকা দিয়ে জনগণের জন্য সর্বোত্তম কাজ করার চেষ্টা করে থাকি। তবে কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে শতভাগ কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয় না।”
স্থানীয়রা আশা করছেন, তদন্ত কমিটি দ্রুত তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে এবং অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে