জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকী ও পবিপ্রবি প্রতিনিধি :
নিঃস্বার্থ মানবসেবার প্রতীক ‘বাঁধন’—এই সংগঠনের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ইউনিট। “আটাশের আহ্বান, নিঃস্বার্থ হোক রক্তদান”—এই অনুপ্রেরণামূলক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলুন উড়িয়ে ও কেক কেটে উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন,“বাঁধন কেবল একটি সংগঠন নয়, এটি মানবতার এক চলমান প্রতিচ্ছবি। রক্তদান মানে কেবল একটি ব্যাগ রক্ত দেওয়া নয়—এটি এক জীবনের প্রতি দায়বদ্ধতা, সহমর্মিতা ও সমাজের প্রতি নীরব প্রতিশ্রুতি। আমাদের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই চেতনা যত বেশি ছড়িয়ে পড়বে, ততই গড়ে উঠবে এক মানবিক বিশ্ববিদ্যালয়।”

তিনি আরও বলেন,“বাঁধনের কর্মীরা নীরবে যে কাজটি করে যাচ্ছেন, তা প্রকৃতপক্ষে একটি সামাজিক বিপ্লব। আমি চাই, এই আন্দোলন আরও বিস্তৃত হোক, প্রতিটি শিক্ষার্থীর হৃদয়ে রক্তদানের স্পৃহা জাগ্রত হোক।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান এবং রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ ইকতিয়ার উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাঁধনের উপদেষ্টা, কর্মী, রক্তদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম নিজ হাতে কেক খাওয়ান উপস্থিত অতিথি ও সদস্যদের এবং সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বের করা হয় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
উপাচার্যের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই আনন্দযাত্রায় অংশ নেন বাঁধনের কর্মী, উপদেষ্টা, রক্তদাতা ও শুভানুধ্যায়ীবৃন্দ। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বেলুন, ব্যানার ও লাল–সবুজ রঙে মুখরিত হয়ে ওঠে এক উৎসবমুখর পরিবেশে।
উল্লেখ্য ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলে এক বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘বাঁধন’-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। “একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বন্ধন”—এই স্লোগান ধারণ করে সংগঠনটি আজ দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছড়িয়ে দিয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদানের এক অনন্য সামাজিক আন্দোলন।
পবিপ্রবি ইউনিটও সেই মহান ধারা অব্যাহত রেখে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মানবতার কল্যাণে। ২৯তম বছরে পদার্পণের এই মাহেন্দ্রক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছে একটাই প্রতিজ্ঞা—“প্রতিটি ফোঁটা রক্ত হোক জীবনের বন্ধন, মানবতার বর্ণিল উদযাপন।