আরাফাত হোসাইন, বাকৃবি প্রতিনিধি:
তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুষ্ঠিত হলো ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব প্রোগ্রামের (ইউআইএইচপি) ফাইনাল পিচ প্রেজেন্টেশন ডে। প্রায় তিন মাসব্যাপী মেন্টরশিপ ও প্রোটোটাইপ উন্নয়ন কার্যক্রম শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের উদ্ভাবনী প্রজেক্ট উপস্থাপন করে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) প্রকল্প পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি ইনোভেশন হাবের সভাপতি ও ফোকাল পয়েন্ট অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, সদস্য অধ্যাপক ড. মো সহিদুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী, ইউআইএইচপির ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব ম্যানেজার জাকেরা রহমানসহ বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। প্রোগ্রামটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন ইউআইএইচপির সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নাহিয়ান বিন আব্দুল্লাহ।
জানা যায়, বাকৃবিতে ১ আগস্ট মোট ১৮টি দল নিয়ে প্রোগ্রামটির তৃতীয় ও চতুর্থ কোহর্টের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় তিন মাসের নিবিড় মেন্টরশিপ শেষে আজকের অনুষ্ঠানে ১২টি দল (প্রতি কোহর্ট থেকে ৬টি করে) জুরি বোর্ডের সামনে তাদের প্রোটোটাইপসহ চূড়ান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে মোট পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা, যেখানে কোহর্ট ৩ এর বিজয়ী দলগুলোকে মোট দুই লক্ষ আশি হাজার টাকা এবং কোহর্ট ৪ এর বিজয়ী দলগুলোকে মোট দুই লক্ষ সত্তর হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এর আগে বাকৃবিতে ১ম ও ২য় কোহর্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারি মাসের পর ৫ম ও ৬ষ্ঠ কোহর্টের কার্যক্রম শুরু হবে।
ফাইনালে জুরি বোর্ডের সদস্যরা ছিলেন- ডিইআইইডি থেকে জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন, বাকৃবি থেকে অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জনাব মো. নিজামুল আলম এবং বিএইচটিপিএ থেকে ডিইআইইডির সহকারী প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মো. মাহাবুল আলম।
ইনোভেশন কোহর্ট ৩ -এ চ্যাম্পিয়ন হয় ‘সহজায়ন’, প্রি-সিড ফান্ড হিসেবে তাদের ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ইনোভেশন কোহর্ট ৪ -এ চ্যাম্পিয়ন হয় ‘আইফিশগার্ড’, প্রি-সিড ফান্ড হিসেবে তাদের প্রদান করা হয় ৫৫ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিএইচটিপিএ’র প্রকল্প পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রি-সিড ফান্ডিং পেলাম কিনা,সবচেয়ে বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হলো আমরা নিজেদের কতটা এগিয়ে নিতে পেরেছি, এটাই আসল সফলতা। কীভাবে একটি আইডিয়াকে ব্যবসায়িকভাবে রূপ দেওয়া যায়, কীভাবে সেটাকে কমার্শিয়ালাইজ করা যায়, আমার ভেতরে কি সেই জ্ঞান এসেছে এটাই আমাদের যাচাই করা উচিত। আমি চাই তোমরা এখান থেকেই আরও সামনে এগিয়ে যাও, নিজেদের আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাও।’
উল্লেখ্য, ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব (UIH) প্রোগ্রামটি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ফান্ডেড এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃক বাস্তবায়িত একটি উদ্যোগ। বর্তমানে এটি দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার লক্ষ্য তরুণদের প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনী আইডিয়াকে বাস্তব উদ্যোগে রূপ দেওয়া।