নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢালিউডের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুতে ২৯ বছর পর আদালত হত্যা মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের নিজ ফ্ল্যাটে তিনি মারা যান। পিবিআই পূর্বে তার মৃত্যু আত্মহত্যা বলে জানিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে নারাজি দেন। আদালত শেষে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নির্দেশ দিয়েছে।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় সালমান শাহর মামা ও চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর হোসেন কুমকুম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক, শাশুড়ি লতিফা হক লুছি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনও আসামি তালিকায় রয়েছে।
আসামিদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশের বাইরে আছেন। রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ লন্ডনে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সামিরা হক, তার মা লতিফা হক লুছি এবং খলনায়ক ডন দেশে ছিলেন। তবে ২০ অক্টোবর আদালত হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়ার পর তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। অন্য আসামিদের অবস্থান এখনও নিশ্চিত হয়নি।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে চারটি পুলিশ সংস্থা নিয়োজিত ছিলেন। প্রথমে রমনা থানার এসআই মাহবুবুর রহমান, পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং এরপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শেষ পর্যায়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে। প্রত্যেকটি সংস্থার প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যু আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
সালমান শাহর মৃত্যুর জুডিসিয়াল তদন্তও করা হয়েছিল। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইমদাদুল হক মামলাটি তদন্ত করেন এবং একই চিত্র দেখা যায়।
২১ অক্টোবর হত্যা মামলা দায়েরের পর রমনা থানার ইন্সপেক্টর আতিকুল আলম খান্দকারকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, নতুন করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া আসামিদের অবস্থান শনাক্ত ও তাদের দেশত্যাগ রোধের জন্য ইমিগ্রেশনে মামলা সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো হয়েছে।