২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গুরুদাসপুরে শত্রুতার জেরে যুবক খুন, তিনদিন পর ভেসে উঠলো লাশ

মোঃ নাঈম ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.

মিলন হোসেন নামের এক যুবককে (৪০) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজার সংলগ্ন নন্দকুঁজা নদীর তীর থেকে ভাসমান লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত মিলন হোসেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের খজের আলীর ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন। অবুঝ তিন নাতি-নাতনিকে বুকে জড়িয়ে মিলনের মা মনেজা বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, শনিবার রাতে মিলনকে বাড়ি থেকে তুলে নেন প্রতিবেশি সইরুদ্দি, আল আমিন ও ইউপি সদস্য আলম। এরপর আর তার ছেলে বাড়ি ফিরে আসেননি। মঙ্গলবার সকালে তিনি খবর পান ছেলের লাশ নদীতে ভাসছে। মিলনের তিন সন্তানের এখন কী হবে ?
তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সইরুদ্দি ও আলম এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন। মাদকসেবী ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে এই দুই ব্যক্তির সম্পর্ক থাকায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে বাঁচাতে ছেলেকে ৬ মাস লুকিয়ে রেখেছিলেন তার মা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। মাদক ব্যবসায়ী সইরুদ্দি আর আলমের হাতেই খুন হতে হলো। তিনি ছেলে হত্যার বিচার চান।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, সইরুদ্দি ও ইউপি সদস্য আলম মোল্লা, হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। এছাড়া সইরুদ্দির সঙ্গে আলমের মাদকের বড় ব্যবসা রয়েছে। তাদের সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য উজ্জল ও মিলনের দ্বন্দ্ব চলছিল। উজ্জল মেম্বর প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযুক্তরা তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াননি। তবে কিছুদিন আগে মিলনকে বেধরক মারপিট করেন সইরুদ্দি, আল আমিন ও ইউপি সদস্য আলম। প্রাণ ভয়ে ঢাকায় আত্মগোপন করেছিলেন মিলন। সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে আসেন। সন্তানদের নিয়ে শনিবার নাজিপুরের নৌকা বাইচও দেখেন। এরপর আর মিলনকে দেখা যায়নি।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলী বলেন, আলমের সঙ্গে নিহত মিলনের পূর্ববিরোধ ছিল। এর আগে আলম লোকজন নিয়ে মিলনকে মারধরও করেছে।
ঘটনার পর থেকে সইরুদ্দি, আল আমিন ও ইউপি সদস্য আলম পলাতক রয়েছেন। একারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দুলাল হোসেন বলেন, মিলনের লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের গলায় আঘাতের চিহৃ ও বিভিন্ন স্থানে ক্ষত থাকায় প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছেন তিনি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত করে সঠিক রহস্য উদঘাটন করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top