মো.সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর জলঢাকায় সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ‘আলম ও রহিম বাহিনী’-র দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে জলঢাকা জিরো পয়েন্ট মোড়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে স্থানীয় সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ৭ অক্টোবর গোলমুন্ডা ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সংবাদ ও মানবাধিকার কর্মী আল-আমিন ইসলাম এর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসী আলম ও রহিম বাহিনীর সদস্যরা। হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন নাগরিকরা জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে, রাতেই মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় ১১ জন নামীয় ও ৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির নাম উল্লেখ করা হয়।
তবে ২২ দিন অতিক্রান্ত হলেও এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, এমন অভিযোগ তুলে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন—আসক (আমরা সচেতন কর্মী) নীলফামারী জেলা সভাপতি ও নির্যাতিত সাংবাদিক আল-আমিন ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সাবু, সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক মোনা ইসলাম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, সাংবাদিক রোকনুজ্জামান, সামিনুর রহমান, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি এন আই মানিক, শ্যামল চন্দ্র রায়, কামরুজ্জামান, খোকনুজ্জামান খোকনসহ স্থানীয় সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
বক্তব্যে সংবাদ ও মানবাধিকার কর্মী জামিয়ার রহমান বলেন, “একজন সাংবাদিক প্রশাসনের সামনেই নির্যাতিত হন, তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। অথচ অভিযুক্তরা আজও এলাকায় ঘুরে বেড়ায় এবং মিষ্টি বিতরণ করছে। পুলিশ কি এসব দেখে না? আমরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি—অভিযুক্ত আলম ও তার সহযোগীরা গ্রেপ্তার না হলে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
মানববন্ধনের প্রধান সমন্বয়ক আল-আমিন ইসলাম বলেন, “আমাকে যারা হামলা করেছে, তারা এখনো ধরা পড়েনি, বরং জামিনে ঘুরছে—এটি প্রশাসনের জন্য লজ্জার বিষয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সুশান্ত রায়কে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, কারণ তিনি আসামি ধরতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।”
আসক জেলা সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সাবু বলেন, “আল-আমিন ভাই আমাদের সামনেই নির্যাতিত হয়েছেন। প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা দোষী পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণ ও আলম বাহিনীর দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করছি।”
তবে নির্যাতিত সংবাদকর্মী আল-আমিন ইসলাম জানান, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
এছাড়া বক্তারা অভিযোগ করেন, সংবাদ ও মানবাধিকার কর্মী নাহিদ হাসানকে পরিকল্পিতভাবে সেনাবাহিনীর নির্যাতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলার ১৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মানববন্ধন থেকে নাহিদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানির বিচার না হলে সারা দেশে যৌথ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।