আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফের কাছে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার ভোরে অনুভূত এই ভূমিকম্পে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে হাজারো মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৩ এবং এটি ভূমির প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরে, খোলম নামের একটি এলাকার কাছাকাছি আঘাত হানে।
খোলম শহরে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ বসবাস করে, আর নিকটবর্তী মাজার-ই-শরিফে রয়েছে প্রায় ৫ লাখ ২৩ হাজার বাসিন্দা। ভূমিকম্পের সময় তীব্র ঝাঁকুনি অনুভূত হওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রাতের অন্ধকারে স্থানীয়রা প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে রাস্তায় ছুটে আসে।
এখনও পর্যন্ত হতাহতের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাদের স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা ব্যবস্থায় ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে, যার অর্থ—বড় প্রাণহানি এবং ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এটি গত দুই মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে দ্বিতীয় বড় ভূমিকম্প। এর আগে আগস্টে পূর্বাঞ্চলে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। সে সময় কাঁচামাটির তৈরি বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়ে, যা দেশটির গ্রামীণ এলাকায় এখনো প্রচলিত। ফলে প্রতিবারই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আফগানিস্তান নিয়মিত ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ, কারণ এটি হিন্দুকুশ পর্বতমালার কাছাকাছি অবস্থিত—যেখানে ইউরেশিয়ান ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫৬০ মানুষ ভূমিকম্পে মারা যায় এবং প্রায় ৮ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়।
১৯৯০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫৫টি বড় ভূমিকম্পে দেশটি কেঁপে উঠেছে, যেগুলোর প্রতিটির মাত্রা ছিল ৫.০ বা তার বেশি।