৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বগুড়ায় আরডিএ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির ঘটনায় মামলা : গ্রেফতার ২

সজীব হাসান, ( বগুড়া) প্রতিনিধি:

বগুড়া শেরপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়ার অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি (অন্যের পরীক্ষা দেওয়া) দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে জিহান আফ্রিদী ব্রাইট (২২) ও শাপলা বেগম (২৯) নামের দুই পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে আরডিএ’র উপ-পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন বাদি হয়ে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন-ধুনট উপজেলার সাতবেকি গ্রামের জাহিদ হোসেনের ছেলে জিহান আফ্রিদী ব্রাইট (রোল নং-৩০০৩৩৩১) ও বরগুনা আমতলি আড়পাঙ্গাসিয়া এলাকার সজিব হোসেনের স্ত্রী শাপলা বেগম (রোল নং-৩১০০৩০০৫) বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা শিমু মার্কেট এলাকায় বসবাস করেন। গতকাল রোববার দুপুরে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১শে অক্টোবর বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে বগুড়ায় আরডিএ’র অফিস সহায়ক পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৬৫জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন।

পরের দিন ১লা নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে আরডিএ’র মহা-পরিচালকের অফিস কক্ষে মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শুরু হয়। ওইদিন দুপুর ২টার সময় পরীক্ষার্থী শাপলা বেগম ও তার পরের পরীক্ষার্থী জিহান আফ্রিদী ব্রাইটকে মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে তারা কোনো প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি। এতে তাদের প্রতি সন্দেহ হলে লিখিত পরীক্ষার খাতা নিয়ে এসে হাতের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। এতে লিখিত পরীক্ষার লেখার সঙ্গে তাদের বর্তমান হাতের লেখার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া পায়নি।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি প্রবেশপত্র জালিয়াতি করে তাদের পরিবর্তে অন্যদেরকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়। পরে শাপলা খাতুন, জিহাদ আফ্রিদি নামের দুইজনকে ও শাপলা খাতুনের সহায়ক হিসেবে মাইদুল ইসলাম নামের একজনসহ তিনজনকে প্রশাসনিক ভবনে আটকে রাখে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এসময় মাইদুল ইসলাম নিজেকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দেন পরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

এছাড়াও নিয়োগ পরীক্ষায় আরেক সহায়ক ফারুক আহমেদ নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল। এ ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এ নিয়োগ পরীক্ষায় আরডিএ অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন।

এছাড়া চারজনকে আটক করা হলেও সেখানে দু’জনের নামে মামলা দিয়ে কিসের বিনিময়ে অন্য দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হল সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। উপ-পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন জানান আমরা দু’জনকে আটকের পর এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্তার অভিযোগে জনরোষের কারণে মাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি আরডিএর ভিতরে এসে আশ্রয় নিলে তাকেসহ তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। সাধারণ জনগণ আরো একজনকে পুলিশের কাছে দিয়েছে বলে শুনেছি।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জয়নুল আবেদিন জানান আমাদের কাছে দু’জনকে দেওয়া হয়েছিল। আটককৃত দু’জনের বিরুদ্ধে আরডিএ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়া অন্য দু’জন আসামির আত্মীয় হিসেবে থানায় এসেছিল কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় তারা চলে গেছে। আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top