মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা হয়নি। এ আসনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকার ভাগ্নে হিসেবে পরিচিত এনডিএম এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছে।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আওয়ামী লীগের পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মহাপুলিশ পরিদর্শক বেনজীর আহম্মেদ ও বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করার ৩টি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। এতেই শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়।
রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিখন লিখেছেন, ফ্যাসিস্টের দোসর কোনোভাবেই বিএনপির সমর্থনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোড় দাবী জানাচ্ছি।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য উজ্জল মন্ডল লিখেছেন, এই হল গোপালগঞ্জের মমিনুল আমিন রাজবাড়ী এসে গোতাগুতি করছে। এ অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী শক্তির মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। কোন স্বৈরাচার ফ্যসিবাদের দোসরকে মানিনা।
আপন শিকদার লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতিত স্বৈরাচারের পালিত কোন ল্যাসপেন্সার(শিষ্য) কোন ভাবেই জাতীয়তাবাদের শরিক হতে পারেনা,,, সংসদ সদস্য হওয়া এটা কি মামা বাড়ির আবদার।
রেইন রবিন লিখেছেন, পতিত স্বৈরাচারের পালিত কোন ল্যাসপেন্সার কোন ভাবেই জাতীয়তাবাদের শরিক হতে পারেনা।
সাহিদুল ইসলাম সায়েদ লিখেছেন, এই হলো রোহিঙ্গার চরিত্র এই হলো গোপালগঞ্জের মমিনুল আমিন রাজবাড়ী এসে গোতাগুতি করছে। এ অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী শক্তির মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। রাজবাড়ী ২ এর বিএনপির সৈনিক মানবে না কোন স্বৈরাচার ফ্যসিবাদের দোসরকে মানিনা।
কাজী মাশুকুর রহমান লিখেছেন, কোন আওয়ামী লীগের দোসর জোট প্রার্থী হবে না ইনশাআল্লাহ। পিরুল মাহমুদ লিখেছেন, মোমেন ভাই প্রচুর খাইছে, খেয়ে লাল এমপি কারো মামা বাড়ির আবদার না। রাজবাড়ী ২ আসন আওয়ামী লীগের দোসরদের কোনো ঠাই নাই। এভাবেই শত শত ফেইসবুক ব্যবহারকারী নানা ধরণের উক্তিসহ ৩টি ছবি আপলোড করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে এনডিএম মহাসচিব ও রাজবাড়ী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোমিনুল আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জীবনে ১ ঘন্টার জন্যও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বা এরকোন অংগ বা সহযোগী সংগঠনের সদস্য ছিলাম বা এদের কোন কর্মসূচিতে আমার অংশগ্রহণ ছিলো প্রমাণ করতে পারলে হাসিমুখে রাজনীতি ছেড়ে দিব। কোটা সংষ্কার আন্দোলনের ‘১৮ এবং ‘২৪ এর অনেক নেতা যারা বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাঁরা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পদধারী সদস্য ছিলো। তবে তাঁরা লেজুরবৃত্তিক রাজনীতির জীবন বেছে না নিয়ে হাসিনা পতনের আন্দোলন করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি আমার প্রোফাইলেই দেয়া আছে। প্রতিটা ছবি পেশাদার কারণে মন্ত্রণালয়ের সেইসময়কার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা র্যাবের তৎকালীন ডিজির সাথে তোলা। এগুলোকে “বিক্রি” করে যারা আমাকে “আওয়ামী লীগ” বানিয়ে তাঁদের প্রিয় অভিভাবকের মনোনয়ন ফিরে পাবার জন্য “খাটযোদ্ধা” হয়েছেন তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা। সোশ্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছাকৃত চরিত্র হননের আইনী প্রতিকারও রয়েছে। আমার পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের ছবি-ভিডিও ধারাবাহিকভাবে আছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বা টেলিভিশন টক-শোতে দেয়া আমার সব বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডও আছে। এসব করে যারা আনন্দ পাচ্ছেন তাঁদের মনজিলে মকসুসে পৌঁছানো বহুদূর। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে বিজয়ে।