মোহাঃ রকিব উদ্দীন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ–৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের পাতানো নির্বাচনে জনগণ নয়, প্রশাসন বিজয়ীদের নির্বাচিত করেছে। প্রশাসনের রাতের ভোটের সেই বিজয় কখনোই জনগণের বিজয় নয়।
শনিবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেহাইচর ভোটকেন্দ্রে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুলবুল বলেন, “২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতের ভোট ও ২০২৪ সালের আমি–ডামি নির্বাচন ছিল প্রহসনের নির্বাচন। এসব নির্বাচনে প্রশাসনের (ডিসি-এসপি) সঙ্গে গোপন বৈঠক করে আগেই ঠিক করা হয়েছিল কে নির্বাচিত হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের সহায়তায় নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করে সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “প্রহসনের নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছেন, তারা জনগণের ভোটে নয়, প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণ জানে কারা দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলবাজ—তাই এদের জনগণ কখনোই ভোট দেবে না।”
জামায়াত নেতা বলেন, যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে মাদক ও অস্ত্রের বিস্তার রোধ করতে হবে। যারা যুবকদের হাতে মাদক ও অস্ত্র তুলে দিচ্ছে, তাদেরকে সামাজিকভাবে বর্জন করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি জানান, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে বেকারত্ব দূরীকরণে যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। নারী–পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে জাতীয় সম্পদে পরিণত করা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় “ভিলেজ পলিটিক্স” বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মহানন্দা ও পদ্মা নদী ভাঙনরোধে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নদী তীরবর্তী এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
বিকেলে একই স্থানে আয়োজিত নারী সমাবেশে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নারী সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “নারীদের ভোটের মাধ্যমেই দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, দখলবাজ ও অস্ত্রবাজদের পরাজিত করতে হবে। যারা রাজনীতির নামে আপনার সন্তানের হাতে মাদক ও অস্ত্র তুলে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়।”
তিনি বলেন, ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে মানুষের মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।
নিজের কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে বুলবুল বলেন, “আওয়ামী সরকারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন-জুলুমের পরেও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও ১০টি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সেবা প্রদান অব্যাহত আছে।”
এ ছাড়া বেকার যুবকদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ, নারীদের সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু বিতরণসহ নানা কল্যাণমূলক কর্মসূচির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও তা নিশ্চিত হয়নি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে সবার আগে এসব অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”
বক্তব্যে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনগণকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।