সজীব হাসান, (বগুড়া) প্রতিনিধি:
কার্তিক মাস পেরিয়ে অগ্রহায়ন মাসে শীতের অনুভব হতেই বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। নতুন ধানের আগমন ঘরে ঘরে নানান রকমের পিটা সাপটার ধুম পড়ছে, নতুন জামাই মেয়েদের আয়োজন নিয়ে গ্রামগঞ্জে খেজুর রসের গুড় নিয়ে বাঁধেছে হৈ চৈঁ। বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো এবছরও দেশের বিভিন্ন জায়গার মতো আদমদীঘি উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাতে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছের মালিকের সাথে চুক্তি করে রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
খেজুর গাছ রোপন না করলেও জমির আইলে পতিত জমিতে খলিয়ান সহ বিভিন্ন জায়গায় হাজার হাজার খেজুর গাছ দেখা যেত। কিন্তু কালের বির্বতনে সেই খেজুর গাছ গুলো তেমন আর চোখে পড়ে না। খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে তেমন কোন আসবাবপত্র তৈরী হয়না জালানী হিসাবে ব্যবহার করা যায়। বছরে একবার খেজুর গাছ রস দেয় সেই রসের গুড়ের স্বাদ আর গন্ধে ভরে যায় মন। এ উপজেলায় গুড়ের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক কম। উপজেলার তালসন গ্রামের খেজুর গাছি এনামুল ইসলাম জানায়, গত কয়েক বছর আগে যে পরিমান খেজুর গাছ ছিল বর্তমানে তার অর্ধেকও নেই। খেজুর গাছের গলা কেটে রস সংগ্রহ করতে হয়।
কার্তিক মাসে শেষে অগ্রহায়নের শুরুতে গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। খেজুরের রস আহরন করা হয় অগ্রহায়ন মাস থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। সেই রস থেকে পাতলা লালি গুড়, পাটারি ও দানাদার গুড় তৈরী করে বাজার জাত করা হয়। খেজুর গাছ কম থাকায় মানুষের চাহিদা মতো গুড় উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।
খেজুরের গুড় দিয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে শীতের পিটা তৈরী করে জামাই আপ্যায়ন করে থাকে। গ্রামের মানুষ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে চাঁদর মুড়ি দিয়ে কাঁপছে আর খেজুরের রস ও মুড়ি এক সঙ্গে নিয়ে খেতে বসবে। কেই যদি না খায় তাহলে তাদের বাৎসরিক খাবার থেকে বিছিন্ন হয়ে পরছে অনেকে মনে করেন।