নিজস্ব প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে, যা দিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে নিজের স্বার্থে প্রচারণা চালাতে এবং ব্যয়বহুল আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারছেন— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, শেখ হাসিনার সহযোগীরা বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল আইন সংস্থাগুলোর একটি নিয়োগ করেছে এবং তার জন্য পিআর এজেন্সিগুলো সাজিয়ে রেখেছে একের পর এক সাক্ষাৎকার, যেগুলো ‘ইমেইলে নেওয়া’ বলে চালানো হচ্ছে।
শফিকুল আলম ফেসবুক পোস্টে উগান্ডার সাবেক স্বৈরশাসক ইদি আমিনের উদাহরণ টেনে লেখেন, ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়া ইদি আমিন নির্বাসিত অবস্থায় কোনো সাক্ষাৎকার দেননি এবং নিঃস্ব অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। অথচ শেখ হাসিনা আমিনের মতো নীরব নন, কারণ তার হাতে প্রচুর অর্থ রয়েছে। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে হাজারো মানুষ নিহত, প্রায় চার হাজার নিখোঁজ এবং তার ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে ব্যাংক লুটপাট সংগঠিত হয়েছে।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, “পশ্চিমা সাংবাদিকরা এমনকি ভারতের চাটুকার গণমাধ্যমও নিশ্চিত নয় এই উত্তরগুলো শেখ হাসিনা নিজে দিচ্ছেন, নাকি তার পিআর টিম লিখে দিচ্ছে, তবুও কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে এসব ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ প্রকাশ করা হচ্ছে।” শফিকুল লেখেন, এটি নতুন কিছু নয়; বিশ্বের বহু স্বৈরশাসক ও দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক এমন প্রচারণার মাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।
তিনি উদাহরণ দেন, আইএমএফের সাবেক প্রধান ডমিনিক স্ট্রস-কান যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেও কোটি কোটি টাকা খরচ করে শীর্ষ আইন সংস্থার সহায়তায় কারাগার এড়ান, চিলির একনায়ক পিনোশেও ইউরোপে পালিয়ে একইভাবে আইনি সুরক্ষা পেয়েছিলেন।
তার মতে, “এইসব পিআর প্রচারণা ও আইনজীবী নিয়োগের লক্ষ্য একটাই— স্বৈরশাসকদের নৃশংস বাস্তবতাকে আড়াল করে তাদের মানবিক মুখে উপস্থাপন করা।” তিনি আরও লেখেন, আগামী সপ্তাহগুলোতে পশ্চিমা গণমাধ্যম ও ভারতীয় ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার আরও ‘ইমেইল সাক্ষাৎকার’ প্রকাশিত হবে, যা কোনোভাবেই গুরুত্ব দেওয়ার মতো নয়, কারণ সেগুলো সত্য বা অনুশোচনা নয়— বরং কোটি কোটি টাকার প্রচারণার ফল, যার উদ্দেশ্য এক গণহত্যাকারীকে মানবিক রূপে উপস্থাপন করা।