মোঃ নাঈম মল্লিক, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল মোল্লা। নিজে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। কিন্তু একটি সড়ক দূর্ঘটনা তার জীবন ও পরিবারকে এলোমেলো করে দিয়েছে। একটি চার বছরের সন্তান ও মাকে নিয়ে এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন।
কামরুল মোল্লা জানান, ২০২৩ সালে বরিশালে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে যোগদান শেষে ফেরার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় পরে পায়ে গুরুত্বতর আঘাত পান। এখন পর্যন্ত চারবার ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে অপারেশন করিয়েও তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে পরিবারটি এখন না খেয়ে দিনপার করছে। সংসারের টানাপোড়েন দেখে স্ত্রীও চলে গেছেন তার বাবার বাড়ী। এখন একমাত্র মা ও চার বছরের ছেলে ওসমান মোল্লাকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। কিছুদিন আগে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছেন, তারা জানিয়েছেন তার আরও একটি অপারেশন করতে হবে। এতে তার প্রয়োজন আরও দুই লাখ টাকা। এর আগে নিজের চিকিৎসার পিছনে খরচ করেছেন ৫-৬ লাখ টাকা।
তার মা জানান, আমার ছেলের আয়েই আমাদের সংসার চলে যেতো। এখন ছেলে কোন কাজ করতে পারে না। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে টাকা পয়সা সব শেষ। এখন বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়েছিলাম তারাও কিস্তির টাকা চাচ্ছে। এখন নিজেরা ভাত খাবো না ছেলের চিকিৎসা করাবো না কিস্তির টাকা দিবো। জানি না আমার ছেলেটার কি হবে।
তার সহকর্মী আবুল বাশার হাওলাদার ও জালাল খান জানান, বরিশাল থেকে তারুণ্যের সমাবেশ শেষে একটি আলফা যোগে আমরা বাড়ী ফিরছিলাম। দপদপিয়া জিরোপয়েন্ট এলাকায় অপরদিক থেকে আসা একটি রডবাহী ভ্যানের সাথে আমাদের বহনকারী আলফার সংঘর্ষ হয়। এসময় কামরুলের পায়ে ভিতর বেশ কয়েকটি রড ঢুকে পরে। আমরা তাকে বরিশাল শেবাচিম পরবর্তীতে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। আমাদের স্থানীয় নেতাকর্মী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আর্থিক সহায়তা করেন। কিন্তু তার ভাগ্য খারাপ একাধিক বার অপারেশন করার পরও তার পা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে নলছিটি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক তৌহিদুল আলম মান্না বলেন, কামরুল মোল্লা আমাদের দলের একজন নিবেদিত মানুষ। দলের দূর্দিনে সে সব প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করেছেন। তাকে আমরা যতটুকু পেরেছি সহায়তা করেছি। কিন্তু তার এখনো একটি অপারেশন করতে হবে আমি আশাবাদী আমাদের দলের হাইকমান্ড তার দিকে আবারও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবেন।