মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-তে যোগদানের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই আলোচনায় উঠে এসেছেন নীলফামারী জেলা সদস্য সচিব ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. কামরুল ইসলাম দর্পণ। দুই দশকের চিকিৎসা ও সমাজসেবার অভিজ্ঞতা, মানবিক কর্মকাণ্ড এবং জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাঁকে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
দলের উত্তরাঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক মো. সারজিস আলম সম্প্রতি তাঁকে নীলফামারী-২ (সদর) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি এনসিপির অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।
ডা. দর্পণ বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জনগণ পরিবর্তন চায়। আমি সবসময় মানুষের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। জনগণ যদি আমার সঙ্গে থাকে, তাহলে নীলফামারী-২ আসনে বিএনপি ও জামায়াতকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে বিজয় অর্জন সম্ভব।”
চিকিৎসক হিসেবে ডা. দর্পণ প্রায় ২০ বছর ধরে নীলফামারীর সাধারণ মানুষকে স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘নাগরিক হাসপাতাল’ স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এক নির্ভরযোগ্য চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির, রক্তদান কর্মসূচি ও দরিদ্র রোগীদের জন্য ওষুধ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
জেলা এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বুলেট বলেন, “ডা. দর্পণ একজন মানবিক ও সৎ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন। জনগণের ভালোবাসাই তাঁকে রাজনীতিতে এনেছে।”
জেলা এনসিপির আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ জানান, “ডা. কামরুল ইসলাম দর্পণ একজন গ্রহণযোগ্য মুখ। নীলফামারী-২ আসনে তাঁর জনপ্রিয়তা এনসিপির পক্ষে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
বর্তমানে নীলফামারী-২ আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার। অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে এনসিপি এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে ডা. দর্পণের নেতৃত্বে দলটির সংগঠন সম্প্রসারণ ও জনসম্পৃক্ততা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক মো. রফিকুল ইসলাম রফিক মনে করেন, “ডা. দর্পণের গ্রহণযোগ্যতা তাঁর চিকিৎসক পরিচয়ের মাধ্যমেই তৈরি হয়েছে। তিনি যদি সাংগঠনিকভাবে মাঠে অবস্থান শক্ত করতে পারেন, তাহলে এনসিপি নীলফামারী-২ আসনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
সাধারণ জীবনযাপন, সততা ও মানবিক আচরণের কারণে ডা. দর্পণ ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত “নাগরিক সেবা ফাউন্ডেশন” স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা স্থানীয় পর্যায়ে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।
রাজনীতিতে নবীন হলেও জনগণের আস্থা ও ভালোবাসায় দ্রুত উত্থান ঘটেছে ডা. কামরুল ইসলাম দর্পণের। সামাজিক সেবা, মানবিকতা ও নৈতিক নেতৃত্বের মেলবন্ধনে তিনি এখন নীলফামারীর রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনার প্রতীক হিসেবে দেখা দিচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি প্রার্থী হলে জামায়াত, বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হতে পারে, যা আগামী নির্বাচনে নীলফামারী-২ আসনকে অন্যতম আলোচিত নির্বাচনী এলাকায় পরিণত করবে।