১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ডোমারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া নিয়োগপত্রে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:

নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ডাংগাপাড়া গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রাজিউল আলম বসুনীয়া (রাজু)-এর বিরুদ্ধে ভুয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা লিখিতভাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আমবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছা. জাহানারা বেগম নিজের ভাতিজার চাকরির আশ্বাসে প্রধান শিক্ষক রাজিউল আলমের হাতে দুই লাখ দশ হাজার টাকা (২,১০,০০০) প্রদান করেন। রাজিউল আলম ওই অর্থের বিনিময়ে ‘পিয়ন পদে নিয়োগপত্র’ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে চাকরি না হওয়ায় জাহানারা বেগম জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

এছাড়া, রাজিউল আলমের বিরুদ্ধে আরও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের মৃত শরাফত হোসেন সরকারের ছেলে ইকবাল রশিদ (৫০) এর কাছ থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে ১৫ লাখ টাকা ধার নেন রাজিউল আলম। পরিশোধের জন্য তিনি নিজ নামে থাকা সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, চিলাহাটি শাখার একটি চেক (নং SH-10 5193121, হিসাব নং ৫৩০২৫০১০১৮৮২৫) প্রদান করেন। তবে ওই চেকটি জমা দেওয়ার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ “অপর্যাপ্ত তহবিল” এবং “স্বাক্ষর অমিল” দেখিয়ে ডিসঅনার সনদ প্রদান করে। পরবর্তীতে ইকবাল রশিদ বিষয়টি আদালতে মামলা করেন, যেখানে রাজিউল আলম কিছু সময়ের জন্য কারাভোগও করেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. রাজিউল আলম বসুনীয়া (রাজু) বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত হয়েছে, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করাটা এখনই সমীচীন নয়।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সম্পন্ন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন রংপুর বিভাগীয় শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।”

স্থানীয় শিক্ষাঙ্গনে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, একজন দায়িত্বশীল শিক্ষাপ্রধানের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্ট করছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top