১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সারা দেশের প্রাথমিকে চালু হলো মিড ডে মিল, গুরুদাসপুরে উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

মোঃ নাঈম ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সারা দেশে চালু হলো মিড ডে মিল কার্যক্রম। ১৫ নভেম্বর শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

এর মাধ্যমে সারা দেশের মোট ১৫০টি উপজেলায় এই মিড ডে মিল কর্মসূচি চালু করা হলো। এই কার্যক্রমের আওতায় দেশের অন্তত ৩১ লাখ শিশু এই খাবার পাবে। মূলত এই প্রকল্পের অর্থায়ন করছে বিশ্ব ব্যাংক। নাটোর জেলার মধ্যে গুরুদাসপুর উপজেলা এই কর্মসূচির আওতায় এসেছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’র প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ও গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ।

প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, এর আগে কয়েক দফায় টেন্ডার জটিলতায় প্রাথমিকের মিড ডে মিল চালু করা যায়নি। দেশের দরিদ্রতার হার বিবেচনায় এনে প্রতি জেলার অন্তত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এই সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। তবে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার প্রতিটি উপজেলাই মিড ডে মিলের আওতায় থাকছে। দেশের মোট ১৫০ টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ১৩ হাজার শিক্ষার্থী মিড ডে মিল পাবে।

সূত্র বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের দেড়শো উপজেলায় মিডডে মিল চালু করা হলো। মিড ডে মিলের খাদ্য তালিকায় শিশুদের জন্য থাকছে ফর্টিফাইড বিস্কুট, কলা বা মৌসুমি ফল, বনরুটি, ডিম এবং ইউএইচটি দুধ। খাবারের সূচিতে প্রতি রোববার ১২০ গ্রাম ওজনের বনরুটি এবং সিদ্ধ ডিম, সোমবার বনরুটির সঙ্গে ২০০ গ্রাম ইউএইচটি দুধ, মঙ্গলবার ৭৫ গ্রাম ওজনের ফর্টিফাইড বিস্কুটের সঙ্গে কলা অথবা স্থানীয় দেশীয় প্রজাতির মওসুমি ফল, বুধ ও বৃহস্পতিবা বনরুটির সঙ্গে সিদ্ধ ডিম দেওয়া হবে।

মিড ডে মিলের প্রস্তাবিত এই খাদ্য তালিকায় মোট এনার্জির ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ৩২ দশমিক ২ শতাংশ, প্রোটিনের ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ফ্যাটের ২১ দশমিক ৭ শতাংশ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, মিড ডে মিলেরর মূল লক্ষ্য-দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি, সমতাভিত্তিক ও গুণগত শিক্ষা অর্জনে সহায়তা করা। পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বেশি শিশু আগ্রহী হবে। বিদ্যালয়ে শিশুদের ধরে রাখার হার অন্তত ৯৯ শতাংশে উন্নীত হবে। বিদ্যালয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের হার ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে শিশুদের ক্ষুধাও নিবারণ হবে।

তিনি বলেন, আজ থেকে প্রাথমিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মিড ডে মিল শুরু করা হয়েছে। সপ্তাহের ৫ দিন শিশুরা মিড ডে মিলের খাবার পাবে। এই খাবার চালু হওয়ায়ার ফলে প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার কমবে। শিশুরা বিদ্যালয়ের প্রতি মনোযোগী হবে। একই সঙ্গে পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি তৈরি হয় প্রাইমারী স্কুলে। এতে শিশুদের শারীরিক মানুসিক বিকাশ ঘটানোর লক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল কর্মসূচি চালু করা হলো। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা মিড ডে মিল সঠিকবভাবে পরিচালনা করলে আগামীতে এর পরিধি আরো বাড়ানো হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top