১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

কুড়িগ্রামের সর্বশেষ ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী, যা বলছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

আনারুল ইসলাম রানা, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের সর্বশেষ ছয় জেলা প্রশাসকের মধ্যে চারজনই নারী। পরপর তিনজন নারী ডিসি দায়িত্ব পালন করায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে কৌতূহল তৈরি করেছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, এটি সম্পূর্ণ কাকতালীয় এবং কোনো বিশেষ সিদ্ধান্তের অংশ নয়।

জাতীয় নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদলের অংশ হিসেবে সরকার আরও ২৩ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। এসব জেলার মধ্যে আছে পাবনা, ঢাকা, রংপুর, যশোর, মেহেরপুর, নোয়াখালী, গাজীপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, মাদারীপুর, মৌলভীবাজার, বরিশাল, বরগুনা, রাঙামাটি, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নেত্রকোনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা এবং নারায়ণগঞ্জ।

এ রদবদলে কুড়িগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অন্নপূর্ণা দেবনাথ। এর আগে তিনি ভূমি সংস্কার বোর্ডে উপভূমি সংস্কার কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতের প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বদলির বিষয়টি জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুল ইসলাম।
এর আগে চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামে ডিসি হিসেবে যোগ দেন সিফাত মেহনাজ। তার আগে দায়িত্বে ছিলেন নুসরাত সুলতানা। তারও আগে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ। তার আগে দায়িত্বে ছিলেন রেজাউল করিম। রেজাউল করিমের আগের ডিসি ছিলেন সুলতানা পারভিন। ২০২০ সালে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় তিনি আলোচনায় আসেন এবং পরবর্তীতে বদলি হন। বর্তমানে তিনি সেই মামলার প্রধান আসামি।

জেলায় নারী প্রশাসকদের ধারাবাহিক উপস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন স্থানীয়রা। জেলা মহিলাদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিক্ষাবিদ,সাংবাদিক,নারী নেত্রী অধ্যাপক নাজমুননাহার বিউটি বলেন, নারীদের এই ক্ষমতায়ন অনুপ্রেরণাদায়ী। যোগ্যতার ভিত্তিতেই তারা দায়িত্ব পেয়েছেন। একজন নারী ডিসি থাকলে জেলার নারীরা অনুপ্রাণিত হন এবং মেয়েরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখতে উৎসাহ পায়।
সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের চার জন নারী জেলা প্রশাসক এসেছেন, একজন সংবাদকর্মী হিসেবে সকলের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য নাহলেও দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এই জেলায় নারী জেলা প্রশাসক হিসেবে এসেছিলেন নুসরাত সুলতানা, তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তিনি যেভাবে এই অনগ্রসর জেলার উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন, জেলার চরাঞ্চলের মানুষের জন্য যেভাবে ছুটে বেরিয়েছেন, ইতিপূর্বে যতজন পুরুষ জেলা প্রশাসক এসেছিলেন, তারা এভাবে কাজ করেছিলেন বলে আমার জানা নাই।আমি আশা করি বতর্মানে যিনি জেলা প্রশাসক হিসেবে এসেছেন, তিনিও ওনার মতো জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করবেন।

সাবেক পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দিক বলেন, নারী-পুরুষ বিষয় নয়, যে জেলা প্রশাসকই আসুক, আমরা চাই তিনি যেন তার দ্বায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন।
এর আগের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জেলায় যোগদানের পর জেলার চর ও গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন বঞ্চিত মানুষের উন্নয়নে যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন।তার ধারাবাহিকতায় বতর্মান নিয়োগকৃত জেলা প্রশাসক সরকারের যে উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে, সেটি যেন বিধিসম্মতভাবে বাস্তবায়ন করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের যুগ্নসচিব মো. রাহেদ হোসেন বলেন, বিষয়টি একদমই কাকতালীয়। কুড়িগ্রাম জেলা নারী জেলা প্রশাসকদের জন্য নির্ধারিত বিষয়টি এমন নয়। নির্বাচন উপলক্ষে নিরপেক্ষতার জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের রদবদল করা হচ্ছে। সকলেই তাদের নিজেরা নিয়োগ পেয়েছেন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top