নিজস্ব প্রতিনিধি:
সন্ত্রাসী পাতা সোহেল ও সুজনকে গ্রেফতারের পর বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পল্লবীর কিবরিয়া হত্যা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে র্যাব–৪। অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম জানান, হত্যাকাণ্ডটি ছিল পরিকল্পিত ‘কিলিং মিশন’, যার নকশা করেছে পাতা সোহেল ও সুজন।
র্যাব জানায়, হত্যার পরপরই পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্তে নামে র্যাব। গত মঙ্গলবার রাতভর আশুলিয়ার বিরুলিয়া ও টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে পাতা সোহেল ও বুকপোড়া সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের পেছনের সংগঠিত চক্রের তথ্য বেরিয়ে আসে।
র্যাব–৪ এর অধিনায়ক জানান, শুটার জনি, কাল্লু ও রোকনকে ভাড়া করে এই হত্যার পরিকল্পনা সাজায় পাতা সোহেল। জনির সঙ্গে ৩০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়, যার মধ্যে ১ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রও সরবরাহ করে সোহেল। পুরো পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিল মাসুম, যাকে পাতা সোহেলের ‘ভাগিনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
র্যাব বলছে, কিবরিয়ার সঙ্গে জড়িতদের একসময় সখ্যতা থাকলেও ৫ আগস্টের পর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। রাজনৈতিক কোন্দল, চাঁদাবাজি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ দখলকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা এবং ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্লবীর একটি হার্ডওয়্যার দোকানে ঢুকে গোলাম কিবরিয়াকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। জনতার ধাওয়ায় শুটার জনি ভূঁইয়া আটক হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। কিবরিয়ার স্ত্রী পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও আটজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন।
দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কিবরিয়া দোকানে ঢোকার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হামলাকারীরা গুলি শুরু করে। দুর্বৃত্তদের মাথায় হেলমেট ও মুখে মুখোশ ছিল। তাকে মাটিতে ফেলে নিশ্চিত করতে আরও তিনটি গুলি করে বেরিয়ে যায় তারা। পালিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল না পেয়ে একটি অটোরিকশায় ওঠে দুইজন; চালক দ্রুত গাড়ি না চালালে তাকেও গুলি করে। গুরুতর আহত অটোরিকশা চালক ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন, আর কিবরিয়াকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।