নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দেড় বছর পরও বিটিভিতে তার দোসর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা বহাল থাকায় প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা না নেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের ঝুঁকিও থেকেই যাচ্ছে।
এনএসআই, দুদক ও বিটিভির নিজস্ব তদন্তে সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নির্বাহী প্রযোজক ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা সফির হোসাইন, ঢাকা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ সেলিমসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভয়ংকর দুর্নীতি, জালিয়াতি, ভুয়া বিল, ঠিকাদারি কারচুপি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি প্রভাবশালী চক্র এসব প্রতিবেদন সচিব ও উপদেষ্টার টেবিলে না তুলে ‘লালফিতায়’ আটকে রেখেছে। সচিব মাহবুবা ফারজানা ও অতিরিক্ত সচিব আলতাফ-উল-আলম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এনএসআইর প্রতিবেদনে সেলিমকে আওয়ামী মতাদর্শী ও সাবেক জিএম মাহফুজা আক্তার–ডিজি জাহাঙ্গীর আলম সিন্ডিকেটের সদস্য উল্লেখ করে অনুষ্ঠান নির্মাণের নামে লাখো টাকার অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
দুদকের প্রতিবেদনে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্টুডিওটেককে সুবিধা দিয়ে প্রকল্প কারচুপি, ভুয়া বিল পরিশোধ এবং সম্পদের হিসাব গোপনের অভিযোগ উল্লেখ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সফির হোসাইনের বিরুদ্ধে ৭ পাতার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারি আদেশ ছাড়াই উচ্চপদে স্বাক্ষর জাল করে সরকারি অর্থ ব্যয়, অনুষ্ঠান বাজেট কারচুপি, জালিয়াতি, অসদাচরণসহ ভয়ংকর অনিয়ম প্রমাণিত হলেও তাকে কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই বহাল রাখা হয়েছে।
বিটিভির ভেতরে-বাইরে দোসর কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য শিল্পী, কলাকুশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। মনিরুল, সেলিম, সফিরকে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কেউই কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
তদন্ত প্রতিবেদন উপেক্ষিত থাকায় বিটিভিকে এখনো দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।