২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শেখ হাসিনা ও পরিবারের নামে রাজধানীতে শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু গুম–খুন নয়, লুটপাটের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে দুদক ও এনবিআরের সিআইসি রাজধানীতে হাসিনা ও তার পরিবারের নামে শতকোটি টাকার স্থাবর–অস্থাবর সম্পদের সন্ধান পেয়েছে।

আয়কর নথিতে শেখ হাসিনা ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার এবং শেখ রেহানা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার দেখালেও দুজনেই ব্যাংকে লকার থাকার তথ্য গোপন করেন। আইন অনুযায়ী লকারের তথ্য গোপন করা অপরাধ।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের নামে–বেনামে বহু সম্পদ চিহ্নিত হয়েছে। গুলশান নিকেতনের ৭২ নম্বর বাড়ি শেখ রেহানার হলেও আয়কর নথিতে মালিক দেখানো হয়েছে তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে। এই বাড়ির ভাড়া নিয়মিত তুলছেন ডেভেলপার কোম্পানির কর্মীরা।

বারিধারা কে ব্লকের ২০ নম্বর বাড়িটি কাগজে সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের নামে থাকলেও প্রকৃত মালিকানা শেখ পরিবারের। আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, এই বাড়ির মালিক সায়মা ওয়াজেদ পুতুল; দাম দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ কোটি টাকা। গুলশান–১ এর ৭ নম্বর বাড়িও নিজের নামে দেখিয়েছেন পুতুল। সেগুনবাগিচায় শেখ রেহানার একটি ফ্ল্যাটেরও সন্ধান পাওয়া গেছে।

দুদক চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুল মোমেন জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা তার হলফনামায় কৃষিজমি ৫ দশমিক ২ একর দেখিয়েছিলেন, অথচ দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ২৯ একর জমি। তিনি বলেন, “হাসিনা তার সম্পদে বড় ধরনের গোঁজামিল দিয়েছিলেন।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় শেখ হাসিনার আয় দেখানো হয়— কৃষি আয় ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, শেয়ার–সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত ২৫ লাখ টাকা, চাকরি থেকে বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ব্যাংক সুদ ও এফডিআর থেকে ৩২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, রয়্যালেটি ২৩ লাখ টাকা।

অস্থাবর সম্পদ হিসাবে দেখানো হয়েছে— নগদ ২৮ হাজার ৫৩০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬০৭ টাকা, সঞ্চয়পত্র ২৫ লাখ, এফডিআর ৫৫ লাখ, ৩টি গাড়ি, ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার, ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে— ১৫ বিঘা জমি, পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরে একটি প্লট (মূল্য দেখানো ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা) এবং ঢাকায় ৩ তলা ভবনসহ ৬ দশমিক ১০ শতাংশ জমি (মূল্য ৫ লাখ টাকা দেখানো)।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top