৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বেরোবি ছাত্রদল কমিটিতে ২০ লাখ টাকার ‘পদবাণিজ্য’- অভিযোগ সভাপতি প্রার্থী ইমরানের

বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি ঘিরে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী ইমরান হোসেন। তাঁর দাবি, কমিটিতে পদ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এমনকি তাকে সভাপতি করার আশ্বাস দিয়ে মোট ১২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ইমরান বলেন,
“কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম লিডার সহ-সভাপতি এম এম মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান, তাইজুলসহ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেনসহ কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি সরাসরি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেছেন।”

ইমরানের দাবি, সহ-সভাপতি এম এম মুসা তাঁকে সরাসরি বলেন—
“১০ লাখ টাকা দিলে তুমি সভাপতি। সভাপতি হলে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার—এসব থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে।”
এসময় মুসা বর্তমান আহ্বায়কের উদাহরণও টেনে বলেন,
“লন্ড্রির দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন টেন্ডার এখন সে পাচ্ছে।”

ইমরান অভিযোগ করেন,
“মুসা আরও বলেন, তাঁর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া সম্ভব, তবে বিনিময়ে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমাকে কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও জানান,
“কমিটি গঠনের সময় তারা এখানে এসে থাকা-খাওয়ার খরচের অজুহাত দিয়ে বোঝান যে নিজেরা ব্যয় করে আমাকে সভাপতি বানানো সম্ভব নয়। এসব কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমি কোচিং ও প্রাইভেট পড়িয়ে উপার্জিত অর্থ থেকে দুই ধাপে ২ লাখ টাকা দিই।”

ইমরানের অভিযোগ, এরপরও কেন্দ্রীয় নেতারা সন্তুষ্ট না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে প্রভাবশালী জামায়াতপন্থী ও আওয়ামীপন্থী কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে প্রায় ২০ লাখ টাকার বেশি লেনদেনের মাধ্যমে পছন্দের ব্যক্তিদের কমিটিতে বসান।

তিনি বলেন,
“এসব দুর্নীতি ও পদবাণিজ্যের বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্নাকে অযৌক্তিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে—যা হাস্যকর, প্রতিহিংসামূলক ও অগণতান্ত্রিক।”
ইমরানের দাবি,
“দশ বছর আগে ছাত্রদলের কাজ করতে গিয়ে মুন্নার ছাত্রত্ব হারায়। অথচ যাদের কারণে তিনি বিপদে পড়েছিলেন, সেই বিতর্কিত ব্যক্তিদেরই এখন কমিটিতে পুরস্কৃত করা হয়েছে।”

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এম এম মুসা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমরা নতুন কমিটিতে চলমান ছাত্রদেরই রেখেছি। আমার বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। পদ না পেয়ে ক্ষোভ থেকে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে।”

তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে ২০ লাখ তো দূরের কথা, ২০ টাকার লেনদেনেরও প্রমাণ দেখাতে পারলে আপনারা তদন্ত করুন। সব অভিযোগই অসত্য।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top