নিজস্ব প্রতিনিধি:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরো দেশ এখন নির্বাচনি উত্তেজনায় সরব। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন ও চার নির্বাচন কমিশনার আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যার মাধ্যমে তফসিল ঘোষণার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বিকালে সিইসির জাতির উদ্দেশে ভাষণ রেকর্ড করা হবে, যেখানে নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। তবে সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত তফসিল ঘোষণা করা হবে। সম্ভাব্য ভোটগ্রহণের তারিখ ১১ অথবা ১২ ফেব্রুয়ারি।
ইসি ইতোমধ্যেই তফসিল ঘোষণার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আসনসীমা পুনর্বিন্যাস, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের তালিকা, মোবাইল কোর্ট, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি, মনিটরিং সেল—সব নির্দেশনার খসড়া প্রস্তুত। ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩, ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬৬টি, আর ভোটকক্ষ ২ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি। যেহেতু একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হবে, তাই প্রতিটি ভোটকক্ষে দু’টি করে গোপন স্থান তৈরি করা হচ্ছে।
ইসির মতে, আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, কারণ দলটির কার্যক্রম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ এবং দলটির নিবন্ধনও স্থগিত। এমনকি পোস্টাল ব্যালটে নৌকা প্রতীকও রাখা হয়নি। ফলে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিক নিবন্ধিত দলগুলো ছাড়া অন্যান্য দলগুলোই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে এবং মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছে।
ইসি মনে করছে, এবারের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণের কারণে ভোট turnout ৭০ শতাংশ ছাড়াতে পারে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথম তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা—মন্তব্য কমিশনারদের। তারা বলেন, তফসিলের পর থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দায়িত্ব কার্যকরভাবে ইসির হাতে আসবে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, বর্তমান সরকারের উপদেষ্টারা পদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন না।
সব মিলিয়ে, নির্বাচনি ট্রেন ছুটতে প্রস্তুত। এখন শুধু সিইসির হুইসেলের অপেক্ষা, এরপরই শুরু হয়ে যাবে আনুষ্ঠানিক ভোটযাত্রা, যার দিকে তাকিয়ে দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহল।